শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

ব্রহ্মপুত্র নদে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন

হুমকির মুখে তীর রক্ষা প্রকল্প
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  ১১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ব্রহ্মপুত্র নদে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন

কুড়িগ্রামের চিলামারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে চর কেটে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্প মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের রাজারভিটা, পুটিমারী কাজলডাঙ্গা, রমনা ইউনিয়নের গুড়াতিপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, নন্দীর মোড়, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল ও ফকিরের হাট এলাকার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা কাউকে তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে চর কেটে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।

এসব এলাকায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের পিচিং দেবে গিয়ে কিংবা ধসে গিয়ে সরকারের শত শত কোটি টাকা ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে রাজারভিটা ফাজিল মাদ্রাসা, মহিলা আলিম মাদ্রাসা, রাজারভিটা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়, আম্বার আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুটিমারী কাজলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোরগাছ বাজার, রমনা বাজার, নবনির্মিত পাউবো বাঁধ, মসজিদ, পাকা রাস্তা, জনবসতি ও ফসলি জমি।

শুক্রবার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের রাজারভিটা এলাকার বালু ব্যবসায়ী আসাদুজামান, মমিনুল ইসলাম, বাদশা মিয়া, স্বপ্নিল ও সাবেক সৈনিক সোহেল মিয়া ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে চর কেটে বালু বিক্রি করছে।

রমনা ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হারুন মিয়া, গোলাম মোস্তফা ও হিটলার ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে স্তূপ করে সেখান থেকে বালু বিক্রি করছে। নন্দির মোড় এলাকার হাফিজুর রহমান, ফারুক মিয়া ও হামিদুল ইসলাম, পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকার মাছুদ মিয়া ও রানীগঞ্জ ফকিরেরহাট এলাকার বিলস্নাল হোসেন ও মিন্টু মিয়া একইভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।

বাড়ির ভিটা উঁচু করার জন্য প্রতি ট্রলি বালু ২০০ টাকা, নির্মাণকাজের জন্য প্রতি ট্রলি বালু ৮০০ টাকা এবং প্রতি ডাম্পার গাড়ি বালু ৭ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে। এভাবে প্রতিদিন শত শত গাড়ি বালু বিক্রি করা হচ্ছে।

রাজারভিটা এলাকার আব্দুল হামিদ, আজিজুল হক, সুজা মিয়া বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্প ঘেঁষে চরটি নদের ভাঙন প্রতিরক্ষা বাঁধসহ গোটা এলাকা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে রক্ষা করছে। কিন্তু বালু উত্তোলন করে গভীর গর্তের সৃষ্টি করায় যেকোনো মুহূর্তে বাঁধসহ গোটা এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়া দিন-রাত বালু ভর্তি গাড়ি মাদ্রাসাসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করায় রাজারভিটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যাওয়া-আসায় মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।

মাদ্রাসা কেন্দ্রসচিব অধ্যক্ষ মিনহাজুল হক জানান, নিষেধ করা সত্ত্বেও বালু ভর্তি গাড়িগুলোর অবাধে যাতায়াত বন্ধ করা যাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুল ইসলাম জানান, বালু উত্তোলন বন্ধ করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে