দেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৯ দশমিক ১৮ শতাংশ।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপেস্নক্সে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে।
ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলামিন বলেন, 'এবারের বিজিএমইএ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ছোটখাটো দু-একটি অভিযোগ ছাড়া প্রার্থীদের তেমন বড় কোনো অভিযোগ ছিল না।'
তিনি জানান, নির্বাচনে মোট ২ হাজার ৪৯৬ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২ হাজার ২২৬ জন, যা শতকরা হিসাবে ৮৯ দশমিক ১২। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৩২ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন এক হাজার ৮৩৯ জন, মানে ৯০ দশমিক ৫০ শতাংশ।
আর চট্টগ্রামে ৪৬৪ ভোটের মধ্যে ৩৮৭ জন ভোট দিয়েছেন। সেখানে ভোট দেওয়ার হার ৮৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
দ্বিবার্ষিক এই নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মোট ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে লড়ছেন ৭০ প্রার্থী। এর মধ্যে ঢাকা থেকে নির্বাচিত হবেন ২৬ জন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হবেন ৯ জন।
নির্বাচনে 'ফোরাম' ও 'সম্মিলিত পরিষদ' নামে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেহা ডিজাইন লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং বিজিএমইএর বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আর ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুরমা গার্মেন্টসের পরিচালক ফয়সাল সামাদ। তিনি বর্তমান কমিটির পরিচালক। একবার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনও করেছেন।
এবারের নির্বাচনে বেড়েছে তরুণ উদ্যোক্তা প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা। এদের অধিকাংশই পারিবারিক ব্যবসার উত্তরাধিকারী হিসেবে আসা তরুণ শিল্পোদ্যোক্তা। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম মিলিয়ে মোট ২১ জন দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যবসায়ী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রার্থী পারিবারিক ব্যবসার উত্তরাধিকারী বা তরুণ প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোটের মাধ্যমে পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের মধ্য থেকে সংগঠনের সভাপতি, প্রথম সহ-সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং দুজন সহ-সভাপতির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। তাদের মনোনয়ন বাছাই শেষে ১৯ মার্চ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।
নেতা নির্বাচন নিয়ে আপত্তি থাকলে আপিলের সুযোগও আছে। সেক্ষেত্রে আপিল নিষ্পত্তির পর ২৮ মার্চ চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে, যারা ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য দায়িত্ব নেবেন।
সর্বশেষ বিজিএমইএ নির্বাচন হয় ২০২১ সালে। ওই ভোটে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালকের ২৪টিতে জয়ী পায় সম্মিলিত পরিষদ। সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক হাসান। আর ওই নির্বাচনে এবিএম সামছুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ফোরাম পায় ১১টি পরিচালক পদ।
২০২৩ সালের এপ্রিলে এই পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় তারা এক বছর সময় বাড়িয়ে নেয়। ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪-২৬ মেয়াদে বিজিএমইএ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
তার আগে ৪ ডিসেম্বর বিজিএমইএর নির্বাচনী বোর্ড গঠিত হয়। বোর্ডের চেয়ারম্যান হন বিটিএমএ'র সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন। অন্য সদস্যরা হলেন-এফবিসিসিআই'র সহ-সভাপতি এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইকাব) সভাপতি শমী কায়সার ও ইকাবের সাবেক সভাপতি এ এস এম নাঈম।
সেদিনের সভায় বিজিএমইএ একটি আপিল বোর্ডও গঠন করে। এ বোর্ডের চেয়ারম্যান হন এমসিসিআইর সভাপতি কামরান টি রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল ও পরিচালক নিজামুদ্দিন রাজেশ।