ভারত থেকে আমাদের দেশে অসংখ্য রোগী আসছে

বিএসএমএমইউ'র অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ভারত থেকে অসংখ্য রোগী বাংলাদেশে চিকিৎসা করাতে আসছেন বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, 'বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান বিশ্বের কোনো দেশের চিকিৎসকদের তুলনায় কম নয়। আমাদের চিকিৎসকদের যে ভালো মেধা আছে, তার অসংখ্য প্রমাণ আমার কাছে আছে। ভুটান থেকে রোগী এসে আমাদের এখানে চিকিৎসা নিচ্ছে। শুধু যে রোগী বাইরে যাচ্ছে এরকম নয়, ভারত থেকে আমাদের দেশে অসংখ্য রোগী আসছে।' শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এমডি-এমএস ফেইজে ভর্তীকৃত রেসিডেন্টদের ইনডাকশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. সামন্ত লাল বলেন, 'হাঙ্গেরি থেকে চিকিৎসক এনে আমরা জোড়া শিশুর অপারেশন করেছি। আমি দেখেছি বাচ্চাদের যখন অ্যানেস্থিসিয়া দেওয়া হয়, তখন হাঙ্গেরির চিকিৎসকরা কিন্তু পারেননি, পেরেছেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরাই। কাজেই আমি বিশ্বাস করি, আমাদের চিকিৎসকরা কোনো দেশের তুলনায় কম নয়।' তিনি বলেন, 'আজকে যারা এখানে আমার সামনে বসে আছেন, আমি সবিনয়ে তাদের কাছে একটা কথা বলব। আসুন আমরা চিকিৎসকদের মানসম্মান এমন এক জায়গায় নিয়ে যাই, যেন এ দেশের লোকজন একদিন চিকিৎসকদের দেখলেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রধান কাজ হলো ধৈর্য ধরে রোগীদের কথা শোনা, ধৈর্য ধরে তাদের সেবা দেওয়া।' মন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকরাই হলো ভবিষ্যতের আসল কান্ডারি। ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। এটি শুধু ডাক্তারের ওপরই নির্ভর করে না। একটা হাসপাতালে ভালো চিকিৎসাসেবা হাসপাতাল পরিচালক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সবার ওপরই নির্ভর করে। সবার সমন্বিত প্রয়াসেই চিকিৎসাসেবার সুনাম বৃদ্ধি করে। তিনি বলেন, 'আমরা সময়মতো হাসপাতালে যাব-আসব। সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে উজাড় করে দেব। আমাদের সাধারণ মানুষ কিন্তু খুব বেশি কিছু চায় না, শুধু একটু গায়ে হাত দিয়ে কথা বলা, সুন্দর করে কুশলাদি বিনিময় করলেই কিন্তু তারা খুশি।' স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীরা সাধারণত রোগ থেকে মুক্তি পেতে অসহায়ের মতো চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসককে পিতার স্থান দখল করতে হয়। চিকিৎসকরা চাইলেই রোগীদের সঙ্গে একটা সুসম্পর্ক তৈরি করতে পারেন। এতে করে রোগীর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় ও ভালো চিকিৎসাসেবা প্রদান করা যায়। তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দেশের বিশাল একটা জনসংখ্যা অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত। যখনই কেউ রোগে আক্রান্ত হয়, সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকের উচিত তাদের সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতার কথা রোগীকে জানানো এবং সে অনুযায়ী রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা।' ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, 'উত্তম আচরণ হলো ন্যায়-অন্যায় আর আসল-নকলের পার্থক্যকারী। আমার উচিত অন্যের সঙ্গে সেভাবেই আচরণ করা, যেমনটি আমি অন্যের কাছ থেকে প্রত্যাশা করি। সব সময় ন্যায়কে ন্যায়, সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে পারাই নৈতিকতা। অনৈতিকতা হলো নৈতিকতার সম্পূর্ণ বিপরীত। নৈতিকতার অভাবে দেশ ও জাতির উন্নতি ব্যাহত হয়, যোগ্য ব্যক্তিরা যথাযথ স্থানে পৌঁছাতে পারে না এবং অযোগ্যদের আস্ফালন বৃদ্ধি পায়। যোগ্য ব্যক্তিরা হীনম্মন্যতায় ভোগেন এবং দেশে বিশৃঙ্খলাতা দেখা দেয়।' অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।