অসদাচরণ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ এনে শেরপুরের নকলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক সাংবাদিককে ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ এই দন্ড দেন। ওই সাংবাদিকের নাম শফিউজ্জামান রানা। তিনি দৈনিক আজকের বাংলাদেশ নামে একটি পত্রিকার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি (বহিস্কৃত)।
সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার বলেন, গত মঙ্গলবার শফিউজ্জামান তার ছেলে শাহরিয়ার জাহানকে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন। আবেদনটি কার্যালয়ের কর্মচারী গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভ কপি (গ্রহণের অনুলিপি) চান। শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। রানা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে অনুলিপি চান। তখন শীলা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনওকে ছাড়া রিসিভ কপি দেওয়া যাবে না। পরে শফিউজ্জামান রানা জেলা প্রশাসককে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। এতে ইউএনও ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে নকলা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ইউএনও এবং সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে রানাকে আটক করে। পরে এসি ল্যান্ড শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শফিউজ্জামানকে ছয় মাসের কারাদন্ড দেন। তিনি স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি চান।
এসি ল্যান্ড শিহাবুল আরিফ বলেন, সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে সরকারি অফিসে অনুপ্রবেশ করে হট্টগোল, সরকারি কাজে বাধা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও অসদাচরণের অভিযোগে ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, 'সাংবাদিক রানা তথ্য চেয়ে আবেদন করেছেন ফেব্রম্নয়ারির ১৮ তারিখ। পূর্বের আবেদনের তথ্য তিনি সেদিন চেয়েছিলেন। আমি বলি তথ্যগুলো প্রস্তুত করছি। আমার হাতে তথ্য দেওয়ার জন্য ২০ দিন সময় আছে। কিন্তু রানা সিএ শীলার কাছে থাকা তথ্যের ফাইল টানাটানি করেন এবং নানা ধরনের অশালীন ভাষায় কথাবর্তা বলেন। এতে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাই আমি এসি ল্যান্ডকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলেছি।'
এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমেদ আবু জাফর তীব্র নিন্দা জানান।