মেহেরপুরে অধিকাংশ পরিবারের সবজির চাহিদা মিটাচ্ছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা এই পারিবারিক পুষ্টি বাগানের সুফল পাচ্ছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনায় পড়ে থাকা পরিত্যক্ত জায়গায় নির্মিত পুষ্টি বাগানগুলো এখন ভরে উঠেছে শীত ও গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন শাকসবজিতে। বাগানগুলোর বিষমুক্ত টাটকা সবজি দিয়ে উদ্যোক্তরা তাদের পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে উদ্ধৃত্ত সবজি প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ করাসহ বিক্রি করে অন্য হাটবাজার সারছেন অনেকে।
এই জেলার মাটি সবজি উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। সবজি উৎপাদনের জন্য যে ধরনের মাটি ও আবহাওয়া দরকার, এর সবই আছে মেহেরপুরে। প্রধানমন্ত্রীর 'দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না' -ঘোষণা বাস্তবায়নে ও পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনার পড়ে থাকা পরিত্যক্ত জায়গায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তোলে। মুজিব জন্ম শতবর্ষে 'বঙ্গবন্ধু কৃষি উৎসব' উপলক্ষে ২০২০ সালে কৃষি বিভাগের সহায়তায় মেহেরপুর জেলায় দুটি পৌরসভাসহ ১৮টি ইউনিয়নের ৮৭৬টি পরিবারে গড়ে উঠে এই বাগান। প্রথমদিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হলেও এখন সরবরাহ করা হচ্ছে সব ধরনের বীজসহ অন্য সরঞ্জামাদি। ফলে বাড়ির আঙ্গিনায় পড়ে থাকা পরিত্যক্ত জায়গায় নির্মিত পুষ্টি বাগানগুলো এখন ভরে উঠেছে বিভিন্ন সবজিতে। কিষাণ-কিষাণীরা এখন তাদের বাগানের সবজি দিয়ে নিজেদের পারিবারিক চাহিদা মেটানোসহ প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ ও বিক্রি করতে পেরে খুশি। বর্তমান বাজারে সবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক এই পুষ্টি বাগানই মেটাচ্ছে তাদের সবজির চাহিদা। ফলে দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান।
সদর উপজেলার দিঘীরপাড়া গ্রামের পুষ্টি বাগান চাষি জানান, কৃষি বিভাগের সহায়তায় বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করছেন। এই সবজি নিজেরা খান, আমাদের পুষ্টির চাহিদা মেটান। প্রতিবেশীদেরও দিয়ে থাকেন। বেশি হলে বিক্রিও করেন। বাজার থেকে আর সবজি কিনতে হয় না।
এই বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চায়না পারভীন জানান, পুষ্টির চাহিদা মেটাতে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় যাদের পরিত্যক্ত জায়গা আছে, তাদের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বুঝিয়ে পারিবারিক পুষ্টি বাগান করে দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, এটি প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। এই প্রকল্পে কৃষকরা সারা বছর ধরে নানা ধরনের সবজি পাবে এই পারিবারিক পুষ্টি বাগান থেকে। পরিত্যক্ত প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনা যাতে এই পুষ্টি বাগান গড়ে উঠে, এর জন্য কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতার পাশপাশি পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।