'বাপ-দাদার রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড চায় না সাঁওতালরা'

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় বাপ-দাদার জমিতে ইপিজেড বাতিলের দাবিতে সাঁওতালদের বিক্ষোভ মিছিল -যাযাদি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মে সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমিতে ইপিজেড বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল, জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির আয়োজন করে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি ও আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাগদাফার্ম সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম থেকে সাঁওতাল-বাঙালিরা একসঙ্গে গাইবান্ধা জেলা শহরে আসেন। তারা গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের সুখ-শান্তির বাজার এলাকায় নেমে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখানে সাঁওতাল-বাঙালিদের প্রতিনিধিরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মশিউর রহমানের হাতে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের জমিতে ইপিজেড বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে অবগত করবেন বলে আশ্বাস দেন। এরপর তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচিতে আদিবাসী ঐতিহ্যের প্রতীক তির-ধনুক, ফেস্টুন ও ব্যানার হাতে শতাধিক সাঁওতাল-বাঙালি নারী-পুরুষ অংশ নেন। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিচিত্রা তির্কী, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু ও সদস্য সচিব মোরশেদ হাসান দীপন, সদর উপজেলা আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেতার্ যাফেল হাসদা, সুফল হেমব্রম, প্রিসিলা মুরমু, সুচিত্রা মুরমু, মার্থিয়াস মার্ডি প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ইপিজেডের নামে সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের ভেতরে তিন ফসলি জমি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। শহীদ শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মারডির রক্তে ভেজা জমিতে ইপিজেড করা চলবে না। গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের ১৮৪২.৩০ একর রিকুইজিশনকৃত জমি আদিবাসীদের ফিরিয়ে দিতে হবে, সাঁওতালদের উপরে আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, গুলিবর্ষণ ও বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহত সাঁওতাল পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী এবং বাঙালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হয়রানি বন্ধসহ তাদের সব দাবি পূরণ করতে হবে।