বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হরিণাকুন্ডুতে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রির মহোৎসব

হরিণাকুন্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
  ০৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
হরিণাকুন্ডুতে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রির মহোৎসব

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে পুকুর খননের আড়ালে চলছে রমরমা মাটিবাণিজ্য। প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে মাটিখেকোরা ট্রলি-ট্রাক্টরযোগে সে মাটি উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করছে। এসব বিষয়ে প্রশাসনের রহস্যময় নীরবতার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসনের নীরব ভূমিকা মাটিকাটা সিন্ডিকেটকে দিন দিন লাগামহীন করে তুলেছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রশাসন মাটি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপজেলার আরশীনগর গ্রামের কবরস্থান সংস্কারের জন্য মাটি নেওয়ার বিনিময়ে ইটভাটায় মাটি বিক্রির আসকারা দিয়ে চলেছেন।

জানা যায়, উপজেলার সাতব্রিজ এলাকার আবুল হোসেন তার ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে পুকুর খনন ও পুকুরের পার বাঁধার অনুমতি চেয়ে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর তানভির হাসান তুরান বরাবর আবেদন করেন। মাটি বিক্রি না করাসহ ২৩ দফা শর্তসাপেক্ষে জেলা প্রশাসন পুকুর খননের অনুমতি দেন। কিন্তু অনুমতি পাওয়ার পর সব শর্ত ভঙ্গ করে উপজেলার হরিশপুর গ্রামের বসির উদ্দীন নামে এক মাটি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে মাটি বিক্রি শুরু করেন। মাটি পরিবহণের কাজে অন্তত ১০টি ট্রাক্টর দিয়ে সারা রাত সেই মাটি বিভিন্ন এলাকার ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কম ওজনধারণকারী রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাটা মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশে পুকুর খননের নামে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করছেন বসির উদ্দীন। তা বন্ধে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও অজানা কারণে তারা কোনো পদক্ষেপই নেননি। স্থানীয় জনতার বিক্ষোভের মুখে ওই ব্যবসায়ীকে একবার জরিমানা করা হলেও পরদিন থেকে দ্বিগুণ জনবল ও গাড়ি নিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় সরবারাহ করে চলেছেন।

জমির মালিক দাবিদার আবুল হোসেন জানান, 'আমি মাটি বিক্রি করছি না। কিছু মাটি যাচ্ছে আরশীনগর গ্রামের কবরস্থানে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে পুকুর কাটার অনুমতির বিনিময়ে এই মাটি নিচ্ছেন।'

মাটি ব্যবসায়ী বশির উদ্দীনকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপমা রায়কে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান বলেন, 'আমরা তাদের একবার জরিমানা করে মাটি বিক্রি বন্ধ করেছিলাম। আবারও যদি তারা একই কাজ করে, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে