যশোরের বাঘারপাড়ায় মিনিস্ট্রি অডিটের নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ডিআইএ শিক্ষা পরিদর্শক রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে ৪৫ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চাকরি চলাকালে ঝামেলার ভয়ে এ টাকা ঘুষ হিসেবে দিতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। উপজেলার ১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত ২৬৮ শিক্ষক-কর্মচারীর মূল বেতনের পুরো, আবার কোথাও অর্ধেক ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
ডিআইএ ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) বিপুল চন্দ্র সরকার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বাঘারপাড়ায় ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন শিক্ষা পরিদর্শক রিপন মিয়া। সে হিসাবে ২৯ জানুয়ারি সকালে বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের যোগ্যতা, বেতন ভাতাদি বণ্টন রেজিস্ট্রার, এমপিওর কপি অন্য বিষয়ে অডিট করবে জানিয়ে চিঠি দেয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর।
বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজ, শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয়, খানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নারিকেলবাড়িয়া সেবা সংঘ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বাকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জামদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খাজুরা ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসা, দূর্গাপুর মহিলা আলিম মাদ্রাসা, রাধানগর আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসা, জিসিটি কুঠিবাড়ি দাখিল মাদ্রাসাসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান। ৪ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত চলে এ অডিট কার্যক্রম।
সূত্রের দাবি অধিদপ্তরের পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা রিপন মিয়া যশোর শহরের মৎস্য অধিদপ্তরের রেস্ট হাউজে শিক্ষকদের সঙ্গে দফায় দফায় দেনদরবার শেষে ঢাকায় ফিরে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধান বলেন, অডিটের সময় নিয়োগ প্রক্রিয়ার জটিলতা আছে, আপনাদের চাকরি চলে যাবে, ফাইল ছুড়ে ফেলা ইত্যাদি বাহানা। ফলে ঝামেলামুক্ত হওয়ার জন্য এক মাসের বেতন তাকে ঘুষ হিসেবে দিয়ে দিতে হয়েছে।
প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আরও বলেন, যশোরের একটি রেস্ট হাউজ থেকে কিছু টাকা নগদ নিয়েছেন। আর সব টাকাই আলাদা সময় প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায় করে ঢাকায় যান। এরপর কর্মকর্তাকে ফোন করে নির্ধারিত স্থানে টাকা পৌঁছে দেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) শিক্ষা পরিদর্শক রিপন মিয়া ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, 'আপনাদের কাছে অভিযোগ থাকলে লিখিত আকারে জানান। তারপর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।'