বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের রশিদপুর পয়েন্ট

জনজীবন রক্ষায় গোলচত্বর নির্মাণের বিকল্প নেই

কামাল হোসেন, বিশ্বনাথ (সিলেট)
  ০৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ রশিদপুর পয়েন্ট -যাযাদি

সড়কে জনজীবনের গুরুত্ব বেশি। অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালকসহ যাত্রীসাধারণ চলাচল করেন। সড়কে ডিভাইটার বা বিভিন্ন পয়েন্টে গোলচত্বর যদি না থাকে বেড়ে যায় আরো বেশি জীবনের ঝুঁকি। এতে পয়েন্টে মুখোমুখি বা সাইড থেকে আসা যানগুলো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘটে মানুষের প্রাণহানি। এভাবে অনেক তাজা প্রাণ অকালে ঝরে গেছে। এই পয়েন্টে অনেক মায়ের কোল শূন্য হয়েছে। বলছি সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে বিশ্বনাথ উপজেলা সীমন্তবর্তী রশিদপুর নামক স্থানটির কথা। এ পয়েন্টে প্রতিবছরে ২ থেকে ৩টি প্রাণঘাতী সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। রশিদপুর হচ্ছে দক্ষিণ সুরমা এবং বিশ্বনাথ উপজেলার সীমান্তবর্তী তিনটি সড়কের সংযোগ স্থল। এ সড়ক দিয়ে লামাকাজী-সিংগেরকাছ-বিশ্বনাথ এবং জগন্নাথপুর অঞ্চলের জনসাধারণ জেলা শহর আর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে যাতায়াত বা বড় বড় ট্রাক বা পণ্যবাহী যান নিয়ে ব্যবসায়ীদের চলাচল করার একমাত্র মাধ্যম এ সড়ক। রশিদপুর পয়েন্টে একটি গোলচত্বর নির্মাণ করার জন্য গণদাবি পরিষদ বিশ্বনাথসহ আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন বিভিন্ন সময় মনববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু আজও এই মহাসড়কে কোনো গোলচত্বর নির্মাণ করা হয়নি।

একদিকে সিলেট-ঢাকা-ঢাকা-সিলেটগামী যান, অন্যদিকে লামাকাজী-সিংগেরকাছ-বিশ্বনাথ এবং জগন্নাথপুর অঞ্চলের বাস যাতায়াত করে। এ ছাড়া বিশ্বনাথমুখী সড়কে রয়েছে একটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এখানে কোনো ট্রাফিকব্যবস্থা না থাকায় অবাধ যান চলাচলে ঘটে চরম দুর্ঘটনা। জনজীবনের ঝুঁকি এড়াতে রশিদপুর সংযোগ এই ত্রিমুখী সড়কে গোলচত্বর নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান সরকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়টি ছয় লাইনে উন্নীত করতে কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজে রশিপুর পয়েন্টটি চিহ্নিত করে জনসাধারণের জীবন নিরাপত্তায় একটি গোলচত্বর নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি। এমনকি ছয় লাইন সড়কে পথচারী পারাপারে এ পয়েন্টে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হক, ব্যবসায়ী আফজাল খান, আতিকুর রহমান, আরমান আলীসহ কয়েকজন বলেন, 'আমাদের বয়স হওয়ার আগ থেকে শুনে এবং দেখে আসছি এখানে প্রায় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এর প্রতিকারে এগিয়ে আসার যেন কেউ নেই।'

দীর্ঘদিন থেকে এই রশিদপুর পয়েন্টে একটি গোলচত্বর নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সংগঠন।

সিলেট-বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাস মাক্রোবাস শ্রমিক উপকমিটির কার্যকরী সভাপতি ফজর আলী বলেন, 'রশিদ পয়েন্ট খুবই বিপজ্জনক জায়গা। এখানে আমার ড্রাইভার শ্রমিক তারা যাত্রীদের নিয়ে খুবই ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হন। বিভিন্ন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।'

গোলচত্বর নির্মাণ করার কথা জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, 'অবশ্যই করণীয় আছে। সড়ক নিরাপত্তায় করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি ছয় লাইন প্রকল্পের আওতায় আছে। তারা ডিজাইন করতেছে। কীভাবে এখানে সড়ক দুর্ঘটনা দূর হয়, তা অবশ্যই দেখা হবে। রশিদপুর পয়েন্টে সরাসরি মেইন রোডে কোনো গাড়ি ঢুকতে পারবে না। এখানে একটি সেফটিক পস্ন্যান থাকবে। হয়ত ঘুরে এসে গাড়িগুলো ঢুকতে হবে। তবে কি ধরনের কাজ হবে তা ডিজাইন না দেখে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।'

সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, 'ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলাপ করে দেখব।'

রশিদপুর পয়েন্টে গোলচত্বর নির্মাণ করা সর্বসাধারণের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। দীর্ঘদিনের এ দাবিতে সড়র নিরাপত্তায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে সরকার অবশ্যই কাজ করবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে