২০২৩-২৪ উৎপাদন বছর
এল নিনোর অভিঘাতে খাদ্যশস্য উৎপাদন কমবে ভারতে
প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বিশ্বজুড়ে এল নিনোর প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে নানা ক্ষেত্রে। এর মধ্যে কৃষি অন্যতম। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভারতে বৃষ্টিপাতসহ মৌসুমি আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণের ফলে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ২০২৩-২৪ উৎপাদন বর্ষে (জুলাই-জুন) দেশটিতে ফসল উৎপাদন ৬ দশমিক ১ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে যা মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। খবর লাইভ মিন্ট। ভারতের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, দ্বিতীয় পূর্বাভাস প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩-২৪ উৎপাদন বছরে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে ৩০ কোটি ৯০ লাখ টন। সরকারের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ উৎপাদন বছরে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে ৩২ কোটি ৯৬ লাখ টন। কম বৃষ্টি হওয়ার পরও খরিফ মৌসুমে শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস বাড়িয়েছে সরকার যা গত অক্টোবরে ১৪ কোটি ৮৫ লাখ থেকে ১৫ কোটি ৪১ লাখ টন করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় পূর্বাভাস করেছে, চলতি উৎপাদন বছরে রবিশস্য উৎপাদন ১৫ কোটি ৫১ লাখ টন হবে। খরিফ ও রবি মৌসুমের (বর্ষা ও শীতকালীন ফসলসহ) সার্বিক খাদ্যশস্য উৎপাদন গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমবে। দেশটিতে এখন আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণে পানির স্তরে চাপ পড়ছে। বদলে যাচ্ছে ফসলের উৎপাদন মৌসুম। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, প্রথম পূর্বাভাস প্রতিবেদনে সরকার কেবল খরিফ ফসলের তথ্য প্রকাশ করেছে। দ্বিতীয় পূর্বাভাস প্রতিবেদনে রবি মৌসুমের তথ্য ও খরিফ ফসলের সংশোধিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কম ফসল উৎপাদন হওয়ায় ধান, অড়হর, মসুর ডাল ও ভুট্টার মতো ফসলের দাম বাড়তে পারে যা নির্বাচনী বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। ভারতে গমকে বলা হয় প্রধান রবি শস্য। চলতি উৎপাদন মৌসুমে রেকর্ড ১১ কোটি ২০ লাখ টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস করা হয়েছে, যেখানে গত উৎপাদন বছরে গম উৎপাদন হয়েছিল ১১ কোটি ৫ লাখ টন। তবে ধান উৎপাদনের পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। চলতি উৎপাদন বছরে ধান উৎপাদন হতে পারে ১২ কোটি ৩৮ লাখ টন, যেখানে গত উৎপাদন বছরে ধান উৎপাদন হয়েছিল ১৩ কোটি ৫৭ লাখ টন। চলতি উৎপাদন বছরে অড়হর উৎপাদনের অক্টোবরের পূর্বাভাস ৩৪ লাখ টন থেকে কমিয়ে ৩৩ লাখ টনে আনা হয়েছে যা আগের বছরের সমান। ভারতের কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অড়হর চাষাবাদ এখনো চলছে। ফলে এ ফসল উৎপাদনের পূর্বাভাস আগামীতে পরিবর্তন হতে পারে। চলতি উৎপাদন বছরে ছোলা উৎপাদন হতে পারে ১ কোটি ২১ লাখ টন যা আগের উৎপাদন বছরের তুলনায় কম। চলতি উৎপাদন বছরে মসুর ডালের উৎপাদন বাড়বে। চলতি বছর মসুর ডাল উৎপাদন হতে পারে ১৬ লাখ টন। আগের উৎপাদন বছরে মসুর ডাল উৎপাদন হয়েছিল ১৫ লাখ টন। দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে ৫ কোটি টন। গত উৎপাদন মৌসুমে এ ফসল উৎপাদন হয়েছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ টন। ভুট্টা উৎপাদন গত উৎপাদন বছরে ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ টন। চলতি উৎপাদন বছরে এর উৎপাদন কমে হবে ৩ কোটি ২৪ টন। সয়াবিন উৎপাদন হবে ১ কোটি ২৫ লাখ টন। সরিষা উৎপাদন হবে ১ কোটি ২৬ লাখ টন। এ দুটো ফসল গত উৎপাদন বছরের সমান উৎপাদন হতে পারে। সুতা উৎপাদন অক্টোবর পূর্বাভাসে ছিল ৩ কোটি ১৬ লাখ বেল। এটা সম্প্রতি বাড়িয়ে ৩ কোটি ২৩ লাখ বেল। গত উৎপাদন বছরে সুতা উৎপাদন হয়েছিল ৩ কোটি ৩৬ লাখ বেল। আখ উৎপাদন কমতে পারে। গত উৎপাদন বছরে ৪৯ কোটি টন আখ উৎপাদন হয়েছিল। অক্টোবরে পূর্বাভাস ৪৩ কোটি ৪৭ লাখ টন থেকে কমিয়ে সম্প্রতি করা হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৪ লাখ টন।