বগুড়ায় এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে গোপালগঞ্জে এক নারী পূজারিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় চা দোকানির আত্মহত্যা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত বৃদ্ধ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্যবরণ করেছেন। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর-
স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া জানান, বগুড়া শহরের চকফরিদ এলাকায় প্রকাশ্যে শনিবার রাতে আজহারুল ইসলাম শান্ত নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত আজহারুল ইন্টারনেট ব্যবসার পাশাপাশি বগুড়ার গাবতলি উপজেলার সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। শহরে ফুলদিঘী এলাকায় তিনি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তার বাড়ি বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায়।
পুলিশ জানায়, শান্ত শহরের চকফরিদ এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে যান। রাস্তার ওপরই তার ওপর হামলা হয়। দুইটি মোটর সাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বগুড়ার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পূর্বশক্রতার জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটতে পারে।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জে হাসিলতা বিশ্বাস (৭০) নামক এক পূজারিকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দিবাগত রাতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ওই নারীর হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
নিহত ওই নারী সদর উপজেলার মালিবাতা বিশ্ববন্ধু সেবাশ্রমের পূজারি ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের দোয়ানীপাড়া গ্রামের মৃত দিপীন বিশ্বাসের স্ত্রী।
গোপালগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান, শনিবার দিবাগত রাতে ওই আশ্রমে তিনি একাই ঘুমিয়ে ছিলেন। রোববার ভোরে এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি আশ্রমে গেলে আশ্রমের মন্দিরের দরজা খোলা দেখতে পান। পরে ভিতরে গেলে হাসিলতার মুখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় এক চা দোকানির গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত সিরাজুল ইসলাম স্বপন (৪৮) উপজেলার তালোড়া ইউনিয়নের গাংবেলঘড়িয়া গ্রামের মৃত শাহজাহান খন্দকারের ছেলে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে সিরাজুল বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশ্যে বের হন। শনিবার পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় ও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বাড়ির লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যায় স্টেশনে অবস্থানরত লোকজন ও তার পরিচিতজনরা ওই চায়ের দোকানে গিয়ে দেখেন দোকানের সার্টার নামানো থাকলেও তালা লাগানো নেই। খুলে দেখেন সিরাজুল গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। খবর পেয়ে রাতেই সান্তাহার রেলওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মোক্তার হোসেন জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা সিরাজুলের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত হুমায়ূন মিয়া (৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার বিকালে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিহত হুমায়ূন মিয়া সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শোলাবাড়ি গ্রামের ভোলা সরদারের বাড়ির মরহুম লাল মিয়ার ছেলে।
নিহতের পরিবার, স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ভোলা সরদারের বাড়ির হুমায়ূন মিয়া ও একই এলাকার এজামতের বাড়ির মিজান মিয়ার মধ্যে জমির সীমানা নিয়ে দীর্ধদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
গত ২ ফেব্রম্নয়ারি এজামতের বাড়ির মিজান মিয়া ও তার অনুসারীরা হুমায়ূন মিয়ার জমিতে সীমানা পিলার বসায়। এ নিয়ে দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও পরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের ইটের আঘাতে ভোলা সরদারের বাড়ির হুমায়ূন মিয়া মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। শনিবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হুমায়ূন মিয়া মারা যান।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আগে একটি মামলা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।