বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মাটিখেকোদের থাবায় রক্ষা পাচ্ছে না জমিসহ নদী-খাল, বিল

কানাইল খাল, ছোট ডাকাতিয়া নদী থেকে মাটি উত্তোলন চৌদ্দগ্রামের শত শত একর ফসলি জমি বিলীন অভিযানের ভয়ে রাতে ভেকুতে চলে মাটি উত্তোলন
চৌদ্দগ্রাম (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
  ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে সবুজ শ্যামল ফসলি জমি কেটে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইট ভাটায় -যাযাদি

কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে রক্ষা পাচ্ছে না ফসলিজমি, এমনকি নদী ও খাল বিল। চৌদ্দগ্রামে বিগত ২-১ বছর পূর্বে সবুজ শ্যামল ফসলি জমির মাঠ দেখা গেলেও এখন এসব ফসলি জমি বিলীন হয়ে গভীর গর্তে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে তিন ফসলি কৃষিজমি পরিণত হচ্ছে পতিত ভূমিতে। এতে দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক, পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। প্রকাশ্যে এসব ফসলিজমির মাটি কাটছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল।

এ ছাড়া মাটি পরিবহণে ভারি ট্রাক, ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক, ভেকু ব্যবহারে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বছর পেরুতেই নতুন সড়ক পরিণত হচ্ছে ভাঙা সড়কে।

অভিযোগ রয়েছে মাটি ব্যবসায়ীরা, ইটভাটা মালিকরা সবকিছু ম্যানেজ করেই এই কর্মকান্ড চালাচ্ছেন। এদিকে উপজেলা প্রশাসন মাটি উত্তোলনে মাঝেমধ্যে বাধা দেওয়ায় মাটি ব্যবসায়ীরা অনেক সময় দিনে মাটি না কেটে সন্ধ্যার পর থেকেই রাতভর মাটি উত্তোলন করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার একাংশের সীমারেখা নাঙ্গলিয়া খাল, ডাকাতিয়া, কানাইল নদীসহ প্রায় সব ছোট-বড় নদী, খালে মাটি ব্যবসায়ীর থাবা থেকে রক্ষা পায়নি। এসব ছোট-বড় নদীর বিভিন্ন অংশে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করছে নিয়মিত। কখনো দিনে কখনো রাতের আধারে মাটি উত্তোলন করছে তারা।

উপজেলার একাধিক কৃষক জানান, যে ফসলিজমির উপরিভাগে ধান বোনা হতো, মাটি তুলে নেওয়ায় সে জমিতে এখন বিশাল আকারের সারি সারি গর্ত।

ইউনিয়নের পেঁচাইমুড়ী গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, পেঁচাইমুড়ী গ্রামের জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে মাটির সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা জোরপূর্বক তার মালিকানা জমি থেকেও মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। পেচাইমুড়ীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর মাটিও রাতের আঁধারে কেটে ট্রাক্টর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। গত মাসখানেক আগে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেপি দেওয়ান জানান, 'রাতের আঁধারে মাটি কাটার অভিযোগ পেয়ে আমরা রাতেও অভিযান চালিয়েছি বিভিন্ন সময়। এসব অভিযানে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এবং থানা বিট অফিসারদেরও সম্পৃক্ত করা হয়। এরপরও বড় উপজেলা হওয়ায় এক প্রান্তে অভিযান হলে আরেক প্রাণে মাটি কেটে নেয় সংশ্লিষ্টরা। মাটি কাটা বন্ধে গত ফেব্রম্নয়ারি মাসেই জরিমানার পাশাপাশি অন্তত ৪-৫টি ট্রাক্টর জব্দ করেছি আমরা।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে