বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে সাগর

পাবনা প্রতিনিধি
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
পাবনার ফরিদপুরে নিহত সাগরের গ্রামের বাড়িতে বাবা হাসান আলী ও মা সাবিনা খাতুনে আহাজারি -যাযাদি

অভাবী সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়েছিলেন সাগর হোসেন (২০)। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই আগুন কেড়ে নিল সব। বাবা-মাসহ সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন সাগর।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃতু্যর মিছিলে যোগ হয়েছে তার নামটিও। নিহত সাগর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আলী ও সাবিনা খাতুন দম্পতির ছেলে। এবছর এইচএসসি পাশ করেছেন তিনি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাগর ছিলেন সকলের বড়। তার বাবা দিনমজুর এবং মা গৃহিনী।

ধানুয়াঘাটা গ্রামের বাসিন্দা ঢাকায় কর্মরত মনিরুল ইসলাম মনির জানান, গারদা শিলড সিকিউরিটি কোম্পানীর মাধ্যমে সিকিউরিটি হিসেবে গত ২৭ ফেব্রম্নয়ারী ক্লথিং ব্যান্ড ইপিলিয়ন শোরুমে জয়েন করেছিলেন ওই ভবনে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় আগুনে আটকা পড়ে মারা যান সাগর।

শুক্রবার বিকেলে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা। তাদের সান্তনা দেওয়ার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশিরা। শোকে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের বাতাস।

সাগরের বাবা হাসান আলী বলেন, 'দিনমজুরি করে কোন রকমে সংসার চালাই। বাবা ছেলে আলোচনা করে কর্মের সন্ধানে তাকে ঢাকায় যেতে বলি। চার মাস আগে সে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে। গতরাতে একটার দিকে জালসা শুনে বাড়ি ফেরার পর শুনতে পাই আমার ছেলে নাই। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচব।'

সাগরের মা সাবিনা খাতুন বলেন, 'দুইদিন আগে ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। বেতন তুলে দশ তারিখে বাড়ি আসবে বলেছিল সাগর। আমি বলেছিলাম যে টাকার দরকার নাই, তুমি বাড়ি চলে আসো। কিন্তু তার আগেই আমার ছেলেটা পৃথিবী থেকে চলে গেল।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে