সিলেটে পরিবহণ ধর্মঘট সংকট সমাধানের আশ্বাসে

১০ ঘণ্টা পর স্থগিত

প্রকাশ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

সিলেট অফিস
পাঁচ দফা দাবিতে সিলেটে পরিবহণ শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট ১০ ঘণ্টা পর স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট বিকাল পৌনে ৪টায় তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম। এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেন তারা। পরে বৈঠকে অংশ নেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। শ্রমিকদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- গ্যাসের সংকট সমাধান; রাজনৈতিক মামলায় শ্রমিকদের না জড়ানো; সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় চালকদের জামিন দেওয়া; পরিষেবা আইন বাতিল করা; দেড় বছর আগে গোলাপগঞ্জে ইউপি নির্বাচনের সময় গ্রেপ্তার চারজন শ্রমিক নেতার মুক্তি। দাবির বিষয়ে বৈঠকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি আগামী ১১ মার্চ পরিবহণ শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন। গ্যাসের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী রমজান মাস পর্যন্ত সিলেটে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হবে। রমজানের পর মেয়র দায়িত্ব নিয়ে গ্যাসের লিমিট বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। এদিকে, সকাল থেকে পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীরা। পরিবহণ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পুলিশের ভ্যানে কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধর্মঘটের কারণে পরীক্ষার্থীসহ কর্মজীবী মানুষ বিপাকে পড়েন। পুলিশের একটি ভ্যানে করে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও কলেজ শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে নিয়ে যায়। সত্যি এটা খুবই ভালো লাগার বিষয়। কারণ আমরা সব সময় পুলিশের খারাপ দিক দেখে সমালোচনা করি। কিন্তু তারাও ভালো কাজ করে। পেট্রোল পাম্প সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে প্রত্যেক মাসের ১৮ থেকে ২০ দিন পর থেকেই পেট্রোল পাম্পগুলোতে অনুমোদিত লোড শেষ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সিএনজিচালিত যানবাহনের চালকরা। এর আগে রোববার নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সিলেট জেলায় সিএনজি চালিত যানবাহনের সিএনজি লোডিংয়ে সব ধরনের সংকট ও প্রতিবন্ধকতা দূর করার দাবিতে মানববন্ধন করেন পরিবহণ শ্রমিকরা। সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, 'দীর্ঘদিন থেকে সিলেটবাসী গ্যাস সংকটের কারণে দুর্ভোগে রয়েছেন। বর্তমানে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। প্রতিদিন বিভিন্ন সিএনজি পাম্পে গ্যাস নেওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গ্যাস পান না শ্রমিকরা। বিগত কয়েক বছর থেকে গ্যাস সংকট সমাধানের লক্ষ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক, স্থানীয় মন্ত্রী ও এমপিদের অবহিত করার পরও সমাধান হচ্ছে না।' এ সময় মঙ্গলবারের মধ্যে গ্যাসের লোড বৃদ্ধি ও সংকট সমাধান না হলে বুধবার থেকে সিলেটের সব সড়ক পরিবহণ শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানানো হয়। আর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার থেকে ধর্মঘটে নামেন শ্রমিকরা। ধর্মঘট চলাকারে বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, সিলেট থেকে দূরপালস্নার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। পর্যটন নগরী সিলেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও আটকা পড়েন। ধর্মঘট শুরু হলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলীবাজার বাইপাস ও চন্ডিপুল ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শ্রমিকদেরা বিভিন্ন গাড়ি আটকে দিতে দেখা যায়।