মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নাগেশ্বরীতে পরীক্ষা শুরুর আগে উত্তরপত্রের ছড়াছড়ি

কক্ষে স্মার্ট ফোন নেওয়ায় শিক্ষককে অব্যাহতি, ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
নাগেশ্বরীতে পরীক্ষা শুরুর আগে উত্তরপত্রের ছড়াছড়ি

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার শুরুর আগে হুবহু উত্তরপত্র পাওয়ার ঘটনায় নরেচরে বসেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় নাগেশ্বরী নিউ প্রতিশ্রম্নতি নামক বেসরকারি স্কুলের পরিচালক ও তার এক শিক্ষককে নাগেশ্বরী আদর্শ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ওই কেন্দ্রের একটি কক্ষে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করায় পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার হলে অতিরিক্ত উত্তরপত্র রেখে চলে যাওয়ায় হাসনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহছেনা আক্তারসহ দুই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন হল সুপার মোশারফ হোসেন।

গত মঙ্গলবার পরীক্ষাকালে এ ঘটনা ঘটে। নাগেশ্বরী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক আহমেদ ও নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রূপ কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার এসএসসির ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা শুরুর আগে একটি উত্তরপত্রের ছবি কিছু অভিভাবকের মোবাইলে ফোনে হোয়াটস অ্যাপ ম্যাসেঞ্জারে আসে। ছবিগুলো আসে সাংবাদিকদের কাছেও। পরে ছবি নিয়ে শুরু হয় নানা কথা।

ছবিটিতে দেখা যায়, ২৭ ফেব্রম্নয়ারি সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে গ্যালাক্সি এটুয়েন্টিফোর একটি ফোন থেকে মঞ্জুর আলম নামে একজন তুলেছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঞ্জুর আলম নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স সংলগ্ন নিউ প্রতিশ্রম্নতি স্কুলের শিক্ষক। নিউ প্রতিশ্রম্নতি স্কুল মূলত একটি কোচিং সেন্টার। আগে থেকেই নিউ প্রতিশ্রম্নতি নামের প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে উত্তরপত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। পরে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা কচাকাটা কলেজের ড্যমোনেস্টটর শহিদুল ইসলাম ও শিক্ষক মঞ্জুর আলমকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এছাড়াও আদর্শ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের টয়লেট থেকে ভেজা উত্তরপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে পুলিশ পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের সার্চ গেটের বাইরে বের করে। এ সময় এক শিক্ষার্থীর কাছে একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়। পরে ওই পরীক্ষার্থীর বাবাকে ডেকে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

নাগেশ্বরী থানার ওসি রূপ কুমার সরকার বলেন, ছড়িয়ে পড়া উত্তরপত্রটিতে দেখা গেছে মঞ্জুর নামে একটি ফোন থেকে তোলা। কথাও এসেছে নিউ প্রতিশ্রম্নতি স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ কারণে নিউ প্রতিশ্রম্নতির পরিচালক শহিদুল ইসলাম ও তার শিক্ষক মঞ্জুরকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়। আপাতত দেখা গেছে ছবি তোলা ফোন এটি নয়। তারপর তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে ক্লিয়ার বোঝা যাবে।

এ বিষয়ে নিউ প্রতিশ্রম্নতি কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও কচাকাটা কলেজের ড্যামোনেস্টটর শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের স্যারেরা ডেকেছে। আমরা এসেছি। অনেক কিছু জানতে চেয়েছে বলেছি। কেন ডেকেছে জানি না।' একই কথা বলেছেন নিউ প্রতিশ্রম্নতির শিক্ষক মঞ্জুর আলম। তিনি বলেন, 'আমি কিছুই জানি না। আমাকে ডেকে যা যা জিজ্ঞাসা করেছে সব বলেছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে