গাজীপুরের কালীগঞ্জে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ক্ষেতে মরা গাছের ডাল দিয়ে পাখি বসার ব্যবস্থা করে ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় নিধন পদ্ধতি (পার্চিং) ব্যবহার করায় কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্য পার্চিং উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলার ২২টি বস্নকে এক যুগে এ পার্চিং উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসবে পার্চিংয়ের উপকারিতা হিসেবে ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণ, কীটনাশকের ব্যবহার কমায়, ফসলের উৎপাদন খরচ কমায় ও পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখাসহ নানা বিষয়ে কৃষকদের মধ্যে আলোচনা করা হয়। এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কৃষক-কৃষানি, গণমাধ্যমকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারাজানা তাসলিম বলেন, 'কালীগঞ্জ উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। তাই আমাদের লক্ষ্য ওই ১০ হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করা। একটি মাজরা পোকা এক সঙ্গে গাদা আকারে ২৫০-৩০০টি ডিম পাড়ে। আর এই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে একটি ফিঙ্গে পাখি একটি মাজরা পোকার মথ খাওয়া মানে ২৫০-৩০০টি মাজরা পোকা খেয়ে ফেলা। কারণ একটি মাজরা পোকার মথ ফুটে ২৫০-৩০০টি কিরা হয় এবং একসঙ্গে ২৫০-৩০০টি ধানের শীষ ক্ষতি করে। সাধারণত এক বিঘা জমিতে পাতাবিহীন শাখা প্রশাখা যুক্ত ৪-৫টি ডাল ধান রোপণের ৭-১০ দিনের মধ্যে পুঁতে দিতে হয়।
তিনি আরও বলেন, পার্চিংয়ের উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ রক্ষার জন্য কীটনাশক ব্যবহার না করে কৃষকের খরচ কমিয়ে দেওয়ার একটি প্রকল্প, যা বোরো ধানের ছয়টি ক্ষতিকারক পোকা যেমন মাজরা, পাতা মোড়ানো পোকা, বিপিএইচ, গান্ধী পোকা, লেদা পোকা দমনের জন্য। মাঠে মরা ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখি যেমন-ফিঙ্গে পাখি বসার ব্যবস্থা করা, যাতে পাখি ডালের ওপর বসে ওইসব পোকা খেতে পারে। পার্চিং প্রযুক্তি হলো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। এতে কৃষক লাভবান হয় ও ফসলের উৎপাদন খরচ কমে যায়।