গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বেড়েই চলছে তামাক চাষ। নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর জেনেও বেশি লাভের আশায় পরিবেশ দূষণকারী এ ফসল চাষ করছেন কৃষকরা। তবে তামাক চাষে অনুৎসাহিত করে লাভজনক ও পরিবেশবান্ধব ফসল চাষের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলার করতোয়া, বাঙ্গালী ও কাটখালী নদী তীরবর্তী চর এলাকায় প্রতি বছরই বেড়ে চলেছে তামাক চাষ। যেসব জমিতে আলু, ধান ও ভুট্টার চাষ করে ব্যাপক ফলন পেলেও দাম ভালো না পাওয়ায় কৃষকরা এসব ফসল চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এ ছাড়াও আলু-ভুট্টাসহ বেশ কিছু ফসলের বাজার মূল্য নির্ধারণ নেই। ভুট্টা নির্ভর কোনো শিল্পকারখানা গড়ে না ওঠায় প্রতিবছরেই নানা সমস্যায় পড়তে হয় কৃষকদের। পাশাপাশি আলু-ভুট্টার দাম ওঠা-নামা করায় লোকসানের মুখে পড়েও এসব ফসল চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন তারা। পক্ষান্তরে তামাক কোম্পানিগুলোর লোভনীয় অফারে বাড়ছে বিষবৃক্ষ তামাকের চাষাবাদ। ঋণ ও বিনামূল্যে বীজ, সার-কীটনাশক সরবরাহ করে কোম্পানির কর্মীরা। কর্মকর্তারা নিয়মিত চাষিদের মাঠ পরিদর্শন করে পরামর্শ ও ক্রয়ের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। যে কারণে কোম্পানির ওপর আস্থা রেখে তামাক চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। বিক্রির নিশ্চয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যতা পেয়ে তামাক চাষে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। এবার উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের গোসাইপুর, মারিয়া, সাতানা বালুয়া, রহলা, বগুলা গাড়িসহ হরিরামপুর, নাকাই, রাখালবুরুজ, তালুককানুপুর, ফুলবাড়ী, সাপমারাসহ বেশ কিছু ইউনিয়নে ব্যাপক তামাক চাষ হয়েছে।
গোশাইপুর এমদাদুল মিয়া বলেন, তামাক পাতা বিক্রির সময় হলে নিজস্ব পরিবহণে চাষির বাড়ি থেকে অথবা নির্দিষ্ট স্থান থেকে তামাক কোম্পানির কর্মকর্তারা তামাক নিয়ে যায়। আর চাষির নিজস্ব ব্যাংক হিসাব নম্বরে তামাকের টাকা পরিশোধ করে।
তবে দুই-একজন কৃষক পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতন। তারা আবার আগে তামাক চাষ করলেও বর্তমানে ক্ষতির কথা বিবেচনা করে তার পরিবর্তে অন্য ফসল চাষ করছেন। তবে উপজেলায় তামাক চাষ বাড়লেও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ বলেন, তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করে ভুট্টাসহ অন্য ফসল চাষে উৎসাহিত করার জন্য উপজেলা কৃষিবিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরেও টোব্যাকো কোম্পানিগুলোর লোভনীয় আশ্বাস ও সুযোগ-সুবিধার কারণে তামাক চাষ ঠেকানো যাচ্ছে না।