বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের আশপাশের বিভিন্ন নদ-নদীতে অবাধে ধরা হচ্ছে নিষিদ্ধ শাপলাপাতা মাছ। এ মাছ আবার সুন্দরবনের উপকূলীয় অন্যান্য অঞ্চলের মতো খুলনার দাকোপের বিভিন্ন হাট বাজারেও প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে এই মাছ শিকার ও বিক্রি নিষিদ্ধ তা জানেন না বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা।
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার সহযোগিতায় অসাধু জেলেরা এ মাছ শিকার করে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে শাপলাপাতা মাছ শিকার ও বিক্রি নিষিদ্ধ শুধু কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ থাকছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাছটির আকৃতি শাপলা পাতার মতো হওয়ায় এটি শাপলাপাতা মাছ নামে পরিচিত। এছাড়া শাপলাপাতা মাছের বৈজ্ঞানিক নাম স্টিংরে ফিশ। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) শাপলাপাতা মাছকে প্রায় বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০০ প্রজাতির শাপলাপাতা থাকলেও বাংলাদেশে ৫৬ প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ পাওয়া যায়। এই মাছ প্রজাতি ভেদে ৮০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।
২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী এই মাছ শিকার ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার সহযোগিতায় বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও সুন্দরবনের আশপাশের বিভিন্ন নদ-নদীতে অসাধু জেলেরা ছোট বড় এ মাছ বরশি দিয়ে শিকার করছেন। এছাড়া শাপলাপাতা মাছ সাগরের গভীরে বিচরণ করলেও বংশ বিস্তারের সময় মাছগুলো তীরের কাছাকাছি আসে। আর আটকে পড়ে জেলেদের জালে।
এ মাছ আবার সুন্দরবনের উপকূলীয় অন্যান্য অঞ্চলের মতো দাকোপ উপজেলা সদর চালনা বৌমার গাছতলা মাছ বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। সমুদ্রবেষ্টিত অঞ্চলের মানুষের কাছে এই শাপলাপাতা মাছ খুবই সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। এছাড়া প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে মাছটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে ক্রেতারাও খুচরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে ক্রয়ে করছেন।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, শাপলাপাতা মাছ একটি জন সম্পদ। এই জন সম্পদ সংরক্ষণের দায়িত্ব সকলেরই। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এই মাছ সংরক্ষনের প্রয়োজন। এ বিষয়ে খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, শাপলাপাতা মাছ সারাদেশেই শিকার নিষিদ্ধ। এবিষয়ে প্রচার প্রচারণা করে জন সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া শাপলাপাতা মাছ শিকার বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে।