৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হওয়ার এক যুগ পেড়িয়ে গেলেও পুরনো জনবল কাঠামো দিয়ে জোড়াতালি দিয়েই চলছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না উপজেলার ১২ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ।
বর্তমানে সেখানে যে ক'জন চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত আছেন তারা এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। আছে আল্ট্রাসোগ্রাম ও এক্সরে মেশিনসহ নানা ধরনের সমস্যা।
তিস্তা বেষ্টিত ৩ তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা এই হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স। যেখানে প্রতিদিনই সীমান্তবর্তী উপজেলাটির বিভিন্ন প্রান্তের রোগীরা ভিড় করেন। বিশেষ করে তিস্তা এলাকার দরিদ্র শ্রেণির মানুষেরা যারা অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণে শহরে যেতে পারে না তাদের কাছে স্বাস্ব্য সেবায় এটিই একমাত্র আশ্রয়স্থল। এ বাস্তবতায় ২০১১ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সটি। কিন্তু একযুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও বৃদ্ধি করা হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল।
নিয়ম অনুযায়ী ১৯ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এখানে রয়েছেন মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক। এদিকে ২৫ জন নার্সের স্থলে কাগজে কলমে ২৪ জন থাকলেও উচ্চতর পড়াশোনার জন্য চলে গেছেন ৭ জন এবং ৩ জন রয়েছে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। এখন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক ও ১৪ জন নার্স দিয়েই চলছে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সটির স্বাস্থ্য সেবা। এদিকে ক্লিনারের ৫টি পদই রয়েছে শূন্য। চিকিৎসকসহ বিভিন্ন সংকটের কারণে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ, অন্যদিকে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে অনেকেই শহরের দিকে ছুটতে বাধ্য হচ্ছেন।
শিশু চিকিৎসাসেবা নিতে আসা দ. গড্ডিমারী এলাকার মোসলেহা বেগম বলেন, 'আমার ৬ মাস বয়সি সন্তানের চিকিৎসা নিতে এসে শিশু বিশেষজ্ঞ শাহানা আফরিনের দেখা না পাওয়ায় জরুরি বিভাগের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যাচ্ছি।'
এসবের বাইরেও রেডিওগ্রাফার না থাকায় অত্যাধুনিক এক্সরে মেশিনটি তালাবদ্ধ পড়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। আছে আল্ট্রাস্নোগ্রাম মেশিন কিন্তু নেই অপারেটর। এতে করে রোগীদের নির্ভর করতে হচ্ছে বাইরের কোনো প্যাথলজির ওপর যা সরকারি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে পরীক্ষা করতে হচ্ছে এসব দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে। আধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকলেও ব্যবহারের অপেক্ষায় পরে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
তবে জনবল সংকটের কথা শিকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ হাসানুল জাহিদ বলেন, 'ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জনবল চাহিদা পাঠানো হয়েছে এবং যোগাযোগ অব্যাহত আছে।'