হুমকির মুখে বোরো ফসল

আড়াই কোটি টাকার খাল এখন গলারকাঁটা

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

হাওড়াঞ্চল প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় করে বরুলিয়া খাল খনন করা হয়েছ। তবে খালের প্রবেশ মুখ বন্ধ হয়ে হুমকির মুখে রয়েছে কয়েক হাজার একর বোরো ফসলি জমি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১ ও ২০২২ অর্থবছরে ঘোড়াউত্রা নদী তীরবর্তী বোরুলিয়া আট কিলো ২শ' মিটার খাল খনন করা জন্য ব্যয় হয়েছিল দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রায় দেড়শ' ফুট জায়গা খনন না হওয়ার কারণে হাওড়ের ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার কৃষক। কৃষকদের অভিযোগ, নদীতে জোয়ারের সময় ছোট্ট আকারের নৌকা ভেতরে গেলেও ভাটার সময়ে তাও আনা সম্ভব হয় না। জানা যায়, ঘোড়াউত্রা নদী থেকে বোরুলিয়া খালের উৎপত্তি। এই খাল দিয়েই নৌকাযোগে বোরুলিয়া, মাধলা, কালারবান, কান্দিরফলা, মোজানল, জোয়ানশাহী ও অষ্টগ্রামের কিছু হাওড়ে প্রবেশ করা যায়। বিভিন্ন জেলা ও কিশোরগঞ্জের বেশ কিছু উপজেলার কৃষকের বোরো জমি এই হাওড়ে। বিশেষ করে এই খাল দিয়েই নিকলী সদর, দামপাড়া, মজলিশপুর, কারপাশা কিশোরগঞ্জের ঢুলদিয়া, করগাঁও ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক কৃষি উপকরণসহ ফসল আনা-নেওয়া করেন। গত মৌসুমে হাওড়ের ফসল আনতে অনেক ব্যয় বেড়ে যায়। এই খালটির প্রবেশদ্বার খনন না হওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি সেচ প্রকল্প চালু থাকলেও খালে পানি না উঠায় কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হবে কয়েক হাজার বোরো ফসল। নিকলী দামপাড়ার কৃষক কামরুল ইসলাম ও নগর গ্রামের রহম আলী জানান, সরকার এত টাকা ব্যয়ে করে কৃষকদের স্বার্থে খালটির খনন করে দিলেও বর্তমানে কৃষক তেমন কোনো কাজেই আসছে না। দেড়শ' থেকে দুইশ' ফুট জায়গা খনন না হওয়ায়। ভাটার সময় এ খালে পানি না থাকায় স্কিমে পানি পাওয়া যায় না। এ ছাড়া সার কীটনাশকসহ কৃষি যন্ত্রপাতি মাথায় করে নিয়ে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে গেলেও জমিতে কাজের সময়টা অসময় হয়ে যায়। অন্যদিকে বৈশাখে ফসল ঘরে তুলতেও খরচ হয় হবে কয়েক গুণ বেশি। ভুক্তভোগীরা সীমাহীন কষ্টের কথা জানিয়ে অতিসত্বর খননের দাবি তোলেন। নিকলী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'খাল খননের দায়িত্ব আমাদের এখতিয়ারে নেই। তবুও হাওড়ে বোরো ফসলের দিক বিবেচনায় ওপর মহলকে এ সমস্যার বিষয়টি জানিয়েছি।' নিকলী উপজেলা প্রকৌশলী সামসুল হক রাকিব বলেন, 'আমার সময়ে খাল খননের কাজটি হয়নি। যখন খালটি খনন করা হয়েছিল তখন তো ভালোই ছিল শুনেছি।' এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, নিকলীতে নদী খননের কোনো কাজই করা হয়নি। ইউএনও পাপিয়া আক্তার বলেন, কৃষকদের সমস্যার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে দেখবেন। এই বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম জানান, বিষয়ট গুরুত্বসহ দেখা হবে।