মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আমগাছগুলো। শাখায় শাখায় বাতাসে দোল খাচ্ছে সেই মুকুল দল। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে ম-ম গন্ধ। যে ঘ্রাণ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে সোনালি রঙের মুকুলগুলো। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর-
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন আমগাছে এরই মধ্যে সোনালি মুকুল আসতে শুরু করেছে। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের ফুল-ফলের সঙ্গে এখন সৌরভ ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন আমের মুকুলও। ফলে গাছে গাছে সোনালি রঙের আমের মুকুলের মৌ-মৌ গন্ধে সুবাসিত হচ্ছে গ্রামীণ জনপদগুলো। পাশাপাশি চারদিকে সোনালি আমের মুকুলের সুমিষ্ট সুবাস আন্দোলিত করে তুলছে পথিকের মনও।
মূলত মাঘের শেষদিক থেকে উপজেলার বিভিন্ন আমগাছে আমের মুকুল দেখা দিতে শুরু করেছে। এ বছর আমের মুকুলের সোনালি রঙয়ের নান্দনিক দৃশ্য অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি লক্ষণীয়। তাই চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিভিন্ন ধরনের আমের ভালো ফলন হবে এমন আশাবাদ স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমচাষ লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় প্রতিবছরই বাড়ির আঙিনা, ছাদকৃষিসহ বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় আমের বাগান কিংবা আম গাছের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন গড়ে ওঠা আমের বাগানগুলোতে বেশিরভাগ গাছই হলো ল্যাংড়া, আম্রপালি, গোপালভোগ ও আশ্বিনা জাতের। কেননা এসব জাতের আম খেতে যেমন সুমিষ্ট, বাজারেও এগুলোর চাহিদা ব্যাপক। তাই কৃষকরা বিভিন্ন স্থান থেকে ওইসব জাতের আমের চারা সংগ্রহ করে তারা ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদনের দিকে নজর বেশি দিচ্ছেন অনেকেই।
স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু গাছে আগাম মুকুলের দেখা মিলছে অনেক বেশি। এদের মধ্যে গোপালভোগ জাতের আম গাছে মুকুল আসায় বেশ খুশি চাষিরা।
তবে অনেক কৃষকরা জানান, আগেভাগে আসা মুকুল আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে শঙ্কা রয়েছে আমের ফলন কমে যাওয়ারও। কেননা কুয়াশা কিংবা বৃষ্টির কবলে না পড়লে, এসব মুকুলে থেকে ভালো আম উৎপাদন হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম শাহজাহান কবির জানান, 'এবার কিছুটা আগেই সোনালি আমের মুকুলে ভরে উঠছে গাছগুলো। তাই স্থানীয় কৃষকদের কথা মাথায় রেখেই যে কোনো পরিস্থিতিতে কৃষকের আমবাগান কিংবা আম গাছের সঠিক পরিচর্যা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে সার্বক্ষণিক কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে আম গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। নানা ধরনের ফল-ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন আমের মুকুলও। সোনালি রঙের আমের মুকুলের ম-ম গন্ধে সুবাসিত এখন প্রকৃতি। চারপাশে আমের মুকুলের সুমিষ্ট সুবাস আন্দোলিত করে তুলছে পথিকের মন।
আমের মুকুলের সোনালি রঙের নান্দনিক দৃশ্য অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি লক্ষণীয়। তাই চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আমের ভালো ফলন হবে- এমন আশাবাদ স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আমচাষ লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় প্রতিবছরই বাড়ির আঙিনা, পুকুরের পাড়, রাস্তার পাশে ও ছাদকৃষিসহ বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় আমের বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন গড়ে ওঠা আমের বাগানগুলোতে বেশিরভাগ গাছই হলো কাটিমন, আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, গোপালভোগ ইত্যাদি জাতের। এসব আম খেতে যেমন সুমিষ্ট, বাজারেও এগুলোর চাহিদা ব্যাপক। তাই কৃষকরা এসব জাতের চারা সংগ্রহ করে তারা বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদনের দিকে নজর বেশি দিচ্ছেন।
উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের মোহাম্মদ ছাইদুল হক জানান, সপ্তাহ আগে থেকে আমগাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে মুকুল বের হচ্ছে। আমের মুকুলে রোগবালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। আমবাগানের সঠিক পরিচর্যা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে সার্বক্ষণিক কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন।