হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের কালনী-কুশিয়ারা নদীর তীরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে ভাঙনের দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে ফসলি জমিসহ অন্তত হাজার হেক্টর জমির ফসল হানির আশঙ্কায় দিন পাড় করছেন স্থানীয় কয়েক শতাধিক কৃষক।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭ বছর আগে পৌরসদরের লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত দুই দফায় প্রায় সাত কিলোমিটার ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পৌরসদরের লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত হাওড়ে চারশ' হেক্টরের বেশি কৃষিজমি রয়েছে। এছাড়া বাঁধটি নদী ভাঙনের কবলে বিলীন হলে পাশের জলসুখা ইউনিয়নের হাওড় ও বদলপুর ইউনিয়নের বেশক'টি হাওরের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমির বোরো ফসল নষ্ট হবার শঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন 'বাঁধটি নির্মাণের পর বছর তিনেক পর দ্বিতীয় দফায় বাঁধটি সংস্কারের সময় বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে বাঁধ সংস্কার করায় বাঁধটি দুর্বল হয়ে গেছে দ্রম্নত। তাই নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে বাঁধটি।'
সরেজমিনে কালনী-কুশিয়ারা ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের ঘাগানি গাছসংলগ্ন এলাকায় দেখা যায়, বেড়িবাঁধের কয়েকটি অংশে ইতিমধ্যে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধটি নদীতে বিলীন হলে কয়েক শত হেক্টর ফসলি জমি এবং তিনটি হাওড়ের কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসল নষ্ট হবার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষক রফিক মিয়া জানান, বাঁধটি দ্রম্নত মেরামত করা না হলে ফসলি জমি ও বোরো ফসল নষ্ট হবার শঙ্কা রয়েছে। সিদ্দিক মিয়া নামের অপর এক কৃষক জানান, বাঁধটি নদী ভাঙনের কবলে পড়লে ঘাগানির হাওড় সহ জলসুখা ও বদলপুর হাওড়ের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
রেজুয়ান মিয়া নামের জমির মালিক জানান, এখানে আমার পৈতৃক ৭০ শতাংশ কৃষি জমি ছিল। বাঁধ নির্মাণের সময় আমাকে না জানিয়েই বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে বাঁধে ১৮ শতাংশ এবং বাঁধের বাইরে ৩৮ শতাংশ জমি চলে যায়। আমার বর্তমানে মাত্র ১৪ শতাংশ জমি রয়ে গেছে। বাঁধটি ভেঙে গেলে সেটিও চলে যাবে নদীতে।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে বাঁধটি দ্রম্নত মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।