মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনা নদীর তীরের বালু কেটে অবাধে চলছে রমরমা ব্যবসা। স্থানীয় এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কাউকে তোয়াক্কা না করে নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে দিন-রাত বালু বিক্রি করছেন। ফলে নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই সব এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন।
স্থানীয়রা জানান, যমুনা নদীর তীর থেকে এভাবে বালু কেটে বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বেরিবাধ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদীর তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন জানান, উপজেলার যমুনা তীরের গান্দাইল ও সাতুরিয়া এলাকায় এ বালু কাটা হচ্ছে। এ বালু কেটে বিক্রি করছেন চঞ্চল শেখ, জাহাঙ্গীর আলম, আলী হোসেন, আশিক শেখ, জহির উদ্দিন গান্দাইলের মোশারফ হোসেন ও লেবু শেখসহ ১০ থেকে ১২ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রতিদিন শত শত ট্রলি ও ট্রাক ভরে যমুনা নদীর তীর থেকে বালু কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করলেও দেখার কেউ নেই।
ওই এলাকার বারেক শেখ ও জলিল উদ্দিন জানান, গত কয়েক বছরে তীর তীরবর্তী এলাকার যমুনা নদীর ভাঙনের কারণে ৪০০ থেকে ৫০০ বাড়িঘর সারিয়ে নেওয়া হয়েছে। নদীভাঙন কবলিত মানুষেরা আরিচা-জাফরগঞ্জ বেড়িবাঁধের ওপর বসবাস করছেন। বেড়িবাঁধটি দেওয়ার কারণে এলাকায় নদীভাঙন আনেকটা কমে গেছে বলে আনেকেই জানিয়েছেন।
এখন নদী তীর থেকে বালু কেটে বিক্রি করায় বর্ষা মৌসুমে নদীর তীরবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বালু ব্যবসায়ীরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পান না। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের কেউ অভিযোগ করতে তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হয়রানি করা হয়। এ কারণে স্থানীয়রা অভিযোগ করতে চান না। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, এলাকার অনেককে ম্যানেজ করে নদী থেকে বালু কেটে বিক্রি করা হচ্ছে।
নদী থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করা চঞ্চল শেখ জানান, আলী হোসেন ও জাহাঙ্গর আলমসহ আমরা ১০ থেকে ১২ জন নদী থেকে বালু কেটে বিক্রি করছি। প্রশাসন আসলে বালুকাটা বন্ধ রাখতে হয়। আমরা কয়েকজন সাংবাদিককেও কিছু টাকা মাসোহারা হিসেবে দিই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, 'উপজেলার যমুনা নদীর তীর অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করার বিষয়টি আমাকে কেউ জানাইনি। তদন্ত করে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'