ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে বিনোদন কেন্দ্র
টানেল ঘিরে 'বড় উঠান এলিফ্যান্ট ইকোপার্কে' দর্শনার্থীর ভিড়
প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
বাঘ-সিংহ না থাকলেও দেয়াং পাহাড়ের দশ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বন্য হাতির বিচরণ। জানমালের ক্ষতি করলেও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এই হাতির অবদান অসামান্য। তাই হাতির ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠানে গড়ে তোলা হয়েছে 'বড়উঠান এলিফ্যান্ট ইকোপার্ক'। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এই পার্কটি প্রতিষ্ঠিত করেন স্থানীয় বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম। এ বছর শীত মৌসুমে পর্যটকদের প্রথম পছন্দের স্থান টানেল ঘিরে পৌঁছে গেছে বড়উঠান এলিফ্যান্ট ইকোপার্ক পর্যন্ত। প্রতিদিন বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। ছুটির দিনে এই ভিড় আরও বাড়ে।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ২ নম্বর বড়উঠান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৫ একর পাহাড়ি খাস জমি দখলমুক্ত করে ২০২৩ সালে গড়ে তোলা হয়েছে এ পার্ক। উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে এই পার্ক গড়ে তোলা হয়। এতে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে এক কোটি সাড়ে ২৬ লাখ টাকা। পার্কের ভেতর গড়া হয়েছে পিকনিক স্পট, শিশু বিনোদন কেন্দ্র। পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠা এই পার্কে চলমান আছে বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ ও কৃত্রিম লেক গড়ার কাজ। পার্কে প্রবেশের মূল গেটের পাশে বেদখল ভূমি উদ্ধার করে তৈরি হয়েছে বাস-মাইক্রো ও মোটর সাইকেলের সুপরিসর পার্কিং। সপ্তাহ জুড়ে দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাসে, পাহাড়ি পাখি ও প্রাণিকূলের কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরোপার্ক। পার্কে প্রবেশ ফি মাত্র দশ টাকা, বিভিন্ন রাইডের ফিও ১০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। এছাড়া পিকনিক স্পট ফি ২০ জন ৫০০ টাকা ও ৫০ জন ১০০০ টাকা ৫১ থেকে তদূর্ধ্ব ১৫০০ টাকা। একই টিকিটে পার্ক দর্শন করতে পারছেন। এখানে দেখা মেলে কালের সাক্ষী বিশালাকার দুর্লভ ও মূল্যবান শতবর্ষী বৃক্ষরাজির। সেসব গাছ নজর কাড়ে সবার। পার্কের উঁচু টাওয়ারে উঠলে মাঝে মাঝে দেখা মেলে দেয়াং পাহাড়ের হাতির বিচরণ। এসব দৃশ্য মোবাইল ফোন ক্যামেরায় বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দর্শনার্থীরা।
দেশের প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মিত হওয়ার পর পাল্টে যাচ্ছে নদীর দক্ষিণ তীরের চিত্র। এ বছর শীত মৌসুমে পর্যটকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় টানেল ও আশপাশের এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, 'ঈদ ও নানা আয়োজনে স্বজনদের বিনোদনার্থে হাতের কাছে পার্কটি-ই আমাদের ভরসা। এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামে শহরের পাশে একমাত্র ইকোপার্ক।'
পার্কের তত্ত্বাবদায়ক মনির হোসেন বলেন, প্রতিদিন পার্কে দেড় থেকে দুই হাজার দর্শনার্থী আসেন। পার্কে এখনো অনেক কাজ বাকি, শিশুদের বিনোদনের রাইটগুলো চালু হলে দর্শনার্থী বাড়বে।
বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম বলেন, প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের সব শ্রেণির মানুষের পক্ষে শহরে গিয়ে বিনোদন সম্ভব নয়। তাই ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে অর্থ নিয়ে এই পার্কটি গড়ে তোলা হয়েছে।