৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড
বোনের দাখিল পরীক্ষা দিতে গিয়ে মেয়ে সেজে ধরা ভাই
প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
একবার দাখিল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর ছোট বোন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। তাই যদি এবারও পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় তাহলে তো ছোট বোন আবারও আত্মহত্যা করতে পারে। সেই ভয়ে ছোট বোনকে এবারের দাখিল পরীক্ষায় বোনের হয়ে বোরকা পরে পরীক্ষা দিতে যান বড় ভাই মোহাম্মদ ইব্রাহিম (১৯)। কিন্তু বিধি বাম! পড়ে গেলেন হল পরিদর্শকের হাতে।
গত মঙ্গলবার পটিয়া শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে নেওয়া হলে আদালত তাকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন।
জানা যায়, আটক ইব্রাহিম আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় বোরকা পরে কেন্দ্রে পরীক্ষা যান। কিন্তু তার চালচলন সন্দেহ হওয়ায় হলের দায়িত্বরত শিক্ষকের নজরে আসে। এ সময় কেন্দ্রের পরিদর্শক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইলিয়াস তাকে চ্যালেঞ্জ করে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে যান। এরপর সেখানে তার পরিহিত বোরকা খুলে দেখেন তিনি একজন ছেলে।
সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ভূঞা জনীকে জানানো হলে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করায় ইব্রাহীমকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়ে সরাসরি পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
মাদ্রাসার কেন্দ্র পরিদর্শক ডা. মো. ইলিয়াস বলেন, 'মঙ্গলবার দাখিল পরীক্ষায় আরবি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চলাকালীন বোরকা পরিহিত এক শিক্ষার্থীকে তার বেশভূষা দেখে সন্দেহ হলে আমরা ওই শিক্ষার্থীর চেহারা দেখাতে বলি। কিন্তু তিনি কোনো কথার জবাব না দিয়ে চুপচাপ বসে থাকেন এমনকি চেহারা দেখাতেও রাজি হননি। এরপর আমরা তাকে হলরুম থেকে বের করে অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে মুখ থেকে বোরকা সরিয়ে দেখি তিনি একজন ছেলে।
এ সময় ইব্রাহিম বলেন, ছোট বোনকে পাস করাতে নিজেই পরীক্ষা কেন্দ্রে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। গত বছর তার ছোট বোন দাখিল পরীক্ষায় ফেল করায় আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এবারের পরীক্ষায়ও যদি সে ফেল করে তাহলে সে আত্মহত্যা করতে পারে। এমন ভয়ে বোনকে বাঁচাতে এই অভিনব পথ বেছে নেন তিনি।