শেরপুরের শ্রীবরদীতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে দুইজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় খাগড়াছড়িতে দুইজন নারী ও পাবনার ঈশ্বরদীতে আরেকজন নিহত হয়। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-
শ্রীবরদী (শেরপুর) ও বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের শ্রীবরদীতে কাঠবোঝাই শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলিকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে যায় যাত্রীবাহী বাস। এতে দুইজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে।
দুর্ঘটনাটি বুধবার সকালে উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের কুরুয়া এলাকায় ঘটেছে।
নিহতরা হলেন-উপজেলার বড় পোড়াগড় এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে ট্রলিচালকের সহকারী হামিদুর রহমান (২৬) এবং পাশের জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে গোলাম ফারুক লিটন (৫০)। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় বড় পোড়াগড় এলাকার শাহেদ আলীর ছেলে ট্রলিচালক রমজান আলীসহ (২০) অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকালের দিকে 'মামনি পরিবহণ' নামে একটি যাত্রীবাহী বাস শেরপুর থেকে বকশীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। পথে কাঠবোঝাই শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলিকে ধাক্কা দিয়ে পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রলির সহকারী হামিদুর রহমান মারা যান। আহত হন ট্রলির চালক ও বাসের যাত্রীসহ অন্তত ১০ জন। আহতদের মধ্যে গোলাম ফারুক লিটনকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অভিযোগ উঠেছে, বাসটিতে চালক ঘুমিয়ে ছিলেন। বাসের সহকারী বাসটি চালিয়ে আসছিলেন।
শ্রীবরদী থানার ওসি কাইয়ুম খান সিদ্দিকী জানান, 'দুর্ঘটনা ঘটার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখান থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তী সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি জানান, খাগড়াছড়িতে পর্যটকবাহী বাস ও যাত্রীবাহী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই নারী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ১৫ জন। বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-জেলা শহরের বসুন্ধরা এলাকার মৃত ননী গোপাল গুহের স্ত্রী প্রীতি বালা গুহ (৪৫) ও একই এলাকার মৃত গৌরাঙ্গ ঘোষের স্ত্রী অনিমা ঘোষ (৬৫)।
স্থানীয়রা জানান, খাগড়াছড়ি থেকে যাত্রী নিয়ে একটি পিকআপ গুইমারা যাচ্ছিল। গাড়িটি সাপমারা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা পর্যটকবাহী রকি পরিবহণের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পিকআপে থাকা দুই নারী ঘটনাস্থলেই মারা যান। এতে ১৫ জন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুইটি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ববস্থা নেওয়া হবে।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোচালক নিহত ও গুরুতর আহত হয়েছে ৫ জন।
মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা-পাকশী আঞ্চলিক সড়কের ঈশ্বরদীর সাহাপুর মসজিদ মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত চালক মো. শরীফ (৪০) উপজেলার আওতাপাড়া এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে।
গুরুতর আহতরা হলেন-কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের জলস্নাদখালিপাড়ার মজিবুর রহমানের ছেলে মোহাম্মাদ মিল্টন, ঈশ্বরদীর মহাদেবপুর গ্রামের সোহরাব প্রামাণিকের ছেলে শরীফ প্রামাণিক, পাবনার দাপুনিয়ার আজাহার প্রামাণিকের ছেলে উজির হোসেন, প্রাইভেটকারের যাত্রী পাবনা সদর থানার বাগচিপাড়ার আব্দুল মান্নানের মেয়ে আঁখি খাতুন ও কামালপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক ফকিরের ছেলে মো. সুমন।
ঈশ্বরদী থানা ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ঘটনার আগে পাকশীর রূপপুর থেকে ৬ যাত্রী নিয়ে আওতাপাড়ায় যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে একটি ভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের মাঝে চলে আসে অটোরিকশাটি। এ সময় অন্য দিক থেকে আসা প্রাইভেটকারের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুইটি জব্দ করা হয়েছে।