কুয়াকাটায় গলায় ফাঁস দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যা
প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় চার বছরের সন্তানের সামনে গলায় ফাঁস দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। এ দিকে বাগেরহাটের মোলস্নাহাটে চুরির বিচার চাওয়ায় ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচার মৃতু্যর অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, নওগাঁর পোরশা এবং খুলনার রূপসা থেকে আরও তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় স্বামী-স্ত্রীর গলায় ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে লতাচাপলী ইউনিয়নের আছালতখাঁ পাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত আরিফ হোসেন (২৬) ওই এলাকার আলী হোসেনের ছেলে। আর স্ত্রী রিয়া মনির (২২) বাবার বাড়ি আমতলী উপজেলার শাখারিয়া এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে ওই বাড়িতে আরিফ, তার স্ত্রী রিয়ামনি ও ৪ বছরের কন্যা শিশু সুমাইয়া ছিল। বিকেলে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বাগ্বিতন্ডা হয়। সন্ধ্যায় তাদের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়ার সামনেই তারা দুইজন নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দেন। শিশু সুমাইয়া তার বাবাকে ঘরের আড়ার সাথে ও মাকে বারান্দার আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে প্রতিবেশীদের ডেকে আনে। পরে স্থানীয়রা তাদের গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
এ বিষয় তাদের একমাত্র সন্তান সুমাইয়া জানায়, 'বাবা আমার মাকে ভাত রান্না না করার জন্য মেরেছে। মা তারপর গলায় ফাঁস দিয়েছেন। তারপর বাবাও গলায় ফাঁস দেয়। এরপর আমি গিয়ে পাশের বাড়ির লোকজন ডেকে আনি।'
মহিপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, স্বামী ও স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বাগেরহাট ও মোলস্নাহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের মোলস্নাহাটে ঘেরের মাছ ও সুপারি চুরির বিচার চাওয়ায় ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা জামিল সরদার (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় ভাতিজার বাবা ও মাসহ কয়েকজনের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন তিনজন। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার জয়ডিহি গ্রামের দাড়িয়াঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জামিল সরদার উপজেলার জয়ডিহি গ্রামের দাড়িয়াঘাটা এলাকার সাহাবুদ্দিন সরদারের ছেলে।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের ইসরাইল সরদার (৬০) ও তার দুই ছেলে হোসেন সরদার (৩৫) এবং রইজ সরদার (২০) অন্যের ঘেরের মাছ, গরু, সুপারি ও মন্দিরে ব্যবহৃত পূজার সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস চুরি করে আসছেন। গত সোমবার রাতেও রইজসহ সঙ্ঘবদ্ধ চোরেরা শাহাদাত সরদারের ঘেরের মাছ চুরি করে। এর পাঁচ-ছয় দিন আগে শাহাদাত সরদারের বাড়ির পুকুরে ভিজিয়ে রাখা এক বস্তা সুপারি চুরি করে রইজ। যেহেতু রইজের বাবা ইসরাইল শাহাদাত সরদারের ভাতিজা, সেহেতু বাইরের লোকজনকে না জানিয়ে আপনজনদের কাছে বিচার দাবি করেন শাহাদাত। বুধবার ভোরে রইজের বাবাকে বলে সম্মানহানির চুরি পেশা ছাড়তে এবং বিচার দিতে। তখন রইজ তার বাবার আপন চাচাতো ভাই জামির সরদারকে ছুরিকাঘাত করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ ছাড়া রইজের বাবা ও মাসহ কয়েকজনের লাঠির আঘাতে আহত হন নিহতের আপন ভাই দেলোয়ার সরদার (৫০), চাচা (ঘের ও সুপারির মালিক) শাহাদাত সরদার (৬৫) ও চাচাতো ভাই সবুজ (৩২)।
থানার ওসি এস এম আশরাফুল আলম জানান, তুচ্ছ চুরির ঘটনায় চাচাতো ভাই ও চাচাদের ঝগড়া হয়। এ সময় সবুজের ছুরিকাঘাতে তার চাচা জামির সরদার নিহত হন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়ধীন আছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ও পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে শীলা আক্তার (১৭) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের ঘড়িহানা গ্রামে ওই কিশোরীর বসতঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্তাবস্থায় সোমবার রাতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শীলা ওই গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের মেয়ে।
জানা গেছে, শীলা স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে গত ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। পরীক্ষায় ফেল করার কারণে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পড়ালেখা না করার কারণে বাবা-মা তাকে বকা দেন। এতে সে বাবা-মায়ের সাথে অভিমান করে নিজ রুমের সিলিং ফ্যানে রশি দিয়ে ফাঁস টানিয়ে আত্মহত্যা করে।
ফরিদগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরির্দশক মো: শামসুজ্জামান বলেন, শীলার লাশ গতকাল মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি অপমৃতু্য মামলা হয়।
পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, প্রায় চার মাস পর নওগাঁ পোরশা উপজেলার সোমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মোকসেদ আলীর (৫৫) লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সোমনগর কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় অ্যাক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, অফিস সহায়ক মোকসেদ আলী গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে মারা যান। স্ট্রোকজনিত কারণে মোকসেদের মৃতু্য হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় এবং দাফন করা হয়। এর কিছুদিন পরে তার বোন সাপাহার উপজেলার মামুরিয়া গ্রামের শফিউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা বেগম তার ভাইয়ের মৃতু্যকে স্বাভাবিক নয় দাবি করে নওগাঁ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোকসেদ আলীর স্ত্রী জান্নাতুন ফেরদৌস ও একই গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে মিজানুর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পুলিশ মিজানুর রহমান এবং ওই গ্রামের লোকমানের ছেলে রহমত আলীকে আটক করে। মোকসেদের স্ত্রী জান্নাতুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার শুনানি শেষে আদালত মোকসেদ আলীর লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। ফলে ম্যাজেস্ট্রিটের উপস্থিতিতে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।
রূপসা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, খুলনার রূপসায় ভাবনা দাস (৩০) নামে দুই সন্তানের জননীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্ম্নহত?্যার ঘটনা ঘটেছে। তিনি উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের তালিমপুর কালিবাড়ী এলাকায় সঞ্জয় দাসের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে গৃহবধূ আত্মহত?্যা করেছেন। মঙ্গলবার ভোরে স্বামী সঞ্জয় দাস স্ত্রী ভাবনাকে বাড়িতে রেখে কাজে যান। সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধে?্য পরিবারের লোকজন কোনো খবর না পেয়ে দেখতে পান নিজ ঘরের আড়ার সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস নেন ভাবনা। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ?্য কমপেস্নক্সে আনলে চিকিৎসক গৃহবধূকে মৃত?্য ঘোষণা করেন।