এক ব্যক্তির দুই এনআইডি যশোরে 'কেঁচো খুঁড়তে কেউটে'
প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
নাম তার জাকির হোসেন, পিতা মো. মুনছুর আলী। অবৈধ বিদু্যৎ সংযোগের মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে জাকির দাবি করেন, তার নাম মোহাম্মদ মোশরফ হোসেন, পিতা মো. হারুনউর রশিদ। বিভ্রান্তিতে পড়ে পুলিশ তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে বলে। জাকির তখন মোশরফ হোসেন নামের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখান। এক পর্যায়ে পুলিশের জেরার মুখে তিনি স্বীকার করেন, জাকির এবং মোশরফ দুই নামেই তার জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। এ ঘটনা উদ্ঘাটনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই টমাস মন্ডল।
গ্রেপ্তারকৃত জাকির হোসেনের দুইটি এনআইডির তথ্য অনুযায়ী একটিতে নাম জাকির হোসেন, পিতা মো. মুনছুর আলী, মাতা সাফিয়া খাতুন, ঠিকানা-সেক্টর ১, উপশহর, সদর, যশোর; জন্ম তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ ইং, এনআইডি নম্বর-৪১১৪৭৯৫২৫২৩৬৬। অন্যটির নম্বর-৭৩৪৯০৬৪৬৫৪, নাম মোহাম্মদ মোশরফ হোসেন, পিতা মো. হারুনউর রশিদ; মাতার নাম, ঠিকানা ও জন্ম তারিখ একই।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের ঘোপ জেল রোডে ঢাকা হোটেল নামে একটি হোটেল চালান জাকির হোসেন। কিন্তু হোটেলটির ট্রেড লাইসেন্স মোহাম্মদ মোশরফ হোসেন নামে নেওয়া। ২০১৯ সালে ট্রেড লাইসেন্স নিলেও তার নামে কোনো বিদু্যৎ সংযোগ নেই। কখনো অবৈধ সংযোগ, কখনো বিদু্যৎ চুরি করে হোটেল চালানোর অভিযোগে গত ২৫ জানুয়ারি ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই হোটেলে অভিযান চালানন। অভিযানে বিদু্যৎ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) আয়েশা আক্তার মৌসুমী ৬২ হাজার ৫শ' টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু এই জরিমানা না দেওয়ায় গত ১৫ ফেব্রম্নয়ারি আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
ওই দিন রাতে উপশহরের জলপাইতলা ফকিরার মোড়ে জাকিরের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় জাকির নিজের পরিচয় লুকাতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশের জেরায় তার দু'টি এনআইডি কার্ড উদ্ধার হয়। একই সঙ্গে জাকির নামে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং মোশরফ নামে ট্রেড লাইসেন্সও উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
দু'টি এনআইডির বিষয়ে যশোর সদর ইউএনও বাদল চন্দ্র অধিকারী বলেন, একই ব্যক্তির দু'টি এনআইডি কার্ড রাখার সুযোগ নেই। তবে দু-একটি ক্ষেত্রে যাদের প্রথম এনআইডি ২০০৭ সালের আগে করা এবং পরে স্মার্টকার্ড গ্রহণের সময় জালিয়াতি করলে এবং আঙুলের ছাপ ম্যাচ না করলে নিতে পারেন। তবে ধরা পড়লে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।