শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

জমি অধিগ্রহণে ন্যায্যমূল্য না দেওয়ার অভিযোগ

পঞ্চগড় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পঞ্চগড়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য অধিগ্রহণ করা জমি -যাযাদি

পঞ্চগড়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণে নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন জমির মালিকরা। অভিযোগ উঠেছে শহরের উপকণ্ঠে এবং হাইওয়ে রাস্তার পাশে এসব জমির অবস্থান হলেও মূল্য দেওয়া হচ্ছে গ্রামীণ কৃষির জমির দরে। তবে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা বলছে ভূমি অধিগ্রহণ আইন মেনে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

জমির মালিক ও ভূমি অধিগ্রহণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ২৩টি 'পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন' প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় জেলার ট্রাক টার্মিনালের পাশে আরাজি শিকারপুর মৌজায় ৬ খতিয়ানভুক্ত প্রায় ৫ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের জন্য স্থানীয়রা জমি প্রদানে সম্মতিও দেয়। কিন্তু জমির মূল্য ও ক্ষতিপূরণের চিঠি পেয়ে তারা হতাশ।

তারা জানায়, জমিগুলোর অবস্থান জেলা শহরের মধ্যে, ঢাকা-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের পাশে। রাস্তার দুই পাশেই রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ওই জমিগুলোতে আখ, তেজপাতা, ধান, গম ছাড়াও নানা ধরনের ফল ফসলের আবাদ হয়। কিন্তু জমিগুলোকে পতিত এবং ছনবাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করে বর্তমানে ওই এলাকার প্রতি শতক জমি আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা দরে কেনাবেচা চলছে। শহরের কাছে এবং হাইওয়ে সড়কের পাশে হওয়ায় নুরুল হক নামে এক জমির মালিক ও তার ছেলে ডা. কামাল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান তাদের নিজস্ব ৫ বিঘা জমিতে একটি হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা নেন। তারা হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ জমি অধিগ্রহণ না করার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদনও করেন। নুরল হক জানান, 'আমার ছেলে ডাক্তার। এলাকার মানুষকে চিকিৎসা সহায়তা দিতে আমাদের জমিতে হাসপাতাল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু সরকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য আমাদের জমি চাইলে আমরা আমাদের কথা জানিয়েছি। তা আমলে নেওয়া হয়নি। বরং পানির দরে আমাদের জমি অধিগ্রহণ করেছে। আমরা এখনো জমির মূল্য গ্রহণ করিনি। আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।'

অপর জমির মালিক খোলাপাড়া এলাকার রিপন জানান, আরাজী শিকারপুর মৌজাটি অনেক বড়। তাই গ্রাম এলাকার জমির মূল্য কম। ওই জমিগুলোর বিক্রিত মূল্যের গড় হিসেবে আমাদের মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা শতক হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। অথচ আরাজী গাইঘাটা এখান থেকে ২ কিলোমিটার দূরে। ওই এলাকায় বিসিআআইসি'র বাফার গুদাম প্রতিষ্ঠার জন্য এখানকার চেয়ে ৪ গুণ বেশি টাকা দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এটা অন্যায়। ২০২৩ সালে আমরা মামলা করেছি।'

ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এ কে এম রায়হানুর রহমান জানান, 'পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য আইন মেনে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ১২ মাসের ৪০টি জমি কেনাবেচার দলিল পর্যবেক্ষণ করে ওইসব জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বাজার মূল্যের ২০০ গুণ বেশি দাম দেওয়া হচ্ছে। জমির মালিকরা আদালতে আরবিটেশন মামলা করেছে। আমরা আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে