রাঙামাটির নানিয়ারচরে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সহচর দুই ভাই সিপন চাকমা ও উষাময় চাকমা। ৬ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন তারা। ইতোমধ্যেই গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। চারিদিকে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছে সে এক অপরূপ দৃশ্য। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে সৌন্দর্যপিয়াসু মানুষ সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসছেন। অনেকেই ফুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন।
নানিয়ারচরের কাঠালতলী গ্রামে তাদের বসবাস। তারা দুই ভাই কৃষিকাজ করেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে এ বছর কাঠালতলীর চেঙ্গী নদীর টিলার বুকে ৬ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ফসল উৎপাদন ও ভালো দাম পাওয়া যায় বলে কৃষকরা এখন সূর্যমুখী চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি বীজ দিতে হয়। দেড় ফুট অন্তর অন্তর একটি করে বীজ বপন করতে হয়। একটি সারি থেকে আরেকটি সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। মাত্র ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ বপন থেকে শুরু করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতি একর জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা এতে ২০ হাজার টাকা লাভ হয়। যা অন্য কোনো ফসলের চেয়ে কম পরিশ্রমে ভালো আয়।
কৃষক সিপন চাকমা এবং উষাময় চাকমা বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে ৬ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভালো আয়ের আশা তাদের। তবে প্রয়োজনীয় সেচের অভাবে ফুলের বাগানে পানি দিতে পারেননি বলেও জানান তারা।
আশেপাশে আরও চারজন কৃষক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। তারা বলছেন, বীজের পাশাপাশি সেচের একটা সুব্যবস্থা করে দিলে আগামীতে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। প্রতি বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষে পাচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করেন প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ৭ মণ ফলন পাবেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে বলে জানান।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি অফিসের কৃষি কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব জানান, সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে রাঙামাটি জেলা পরিষদের প্রজেক্টের মাধ্যমে বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হয়েছে। তারা সার ও কীটনাশক দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।