সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যৌন হয়রানির কারণে ছোট ভাইকে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন সোহেল

টাঙ্গাইলে পিবিআইর প্রেস ব্রিফিং
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যৌন হয়রানির কারণে ছোট ভাইকে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন সোহেল

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পারখী ইউনিয়নের বগা বিলে মাটিচাপা দেওয়া গলিত অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই। পারিবারিক নানা কলহের কারণে প্রবাস ফেরত বড় ভাই মো. সোহেল তার ছোট ভাই মুকুলকে (২৪) পাশের সখীপুর উপজেলা থেকে ডেকে এনে এক বন্ধুর সহযোগিতায় শ্বাসরোধে খুন করেন। এরপর বগা বিলের কাঁদামাটির নিচে পুঁতে রাখেন।

রোববার টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের বিষয়ে বর্ণনা দেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, পারখী ইউনিয়নের মনির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশ থেকে গত ১২ ফেব্রম্নয়ারি কাঁদামাটির নিচে পুঁতে রাখা গলিত জনৈক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জামা-কাপড় দেখে পারখী গ্রামের গৃহবধূ লিমা আক্তার মরদেহটি তার নিখোঁজ স্বামী মো. মুকুলের বলে শনাক্ত করেন। মুকুল সখীপুর উপজেলার ইন্দারজানী এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থেকে খুংগারচালা বাজারে ইলেকট্রিক দোকান চালাতেন। গত ২৭ জানুয়ারি মুকুল তার স্ত্রী লিমাকে মোবাইল ফোনে জানান তিনি পৈতৃক বাড়ি কালিহাতীর পারখী যাচ্ছেন এবং রাতে ফিরবেন না। এরপর থেকে মুকুল নিখোঁজ ছিলেন। তিনি কালিহাতীর পারখী গ্রামের মো. হানিফার ছেলে। মরদেহ শনাক্ত করার পর স্ত্রী লিমা বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় হত্যা মামলা করেন। টাঙ্গাইল পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তিনি জানান, টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান আনসারীর নেতৃত্বে গত শনিবার রাতে ঢাকা ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত মুকুলের প্রবাস ফেরত বড় ভাই মো. সোহেল (৩৪) ও তার এক প্রকার বন্ধু পরেশ চন্দ্র শীল ওরফে নওমুসলিম নাজমুল হোসেনকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তাররা মুকুলকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।

গ্রেপ্তারদের বরাতে পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার সোহেল জানিয়েছেন- তার ছোট ভাই মুকুল মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রেতা ছিলেন। তিনি প্রবাসে থাকাকালে পাঠানো টাকা মাদকের পেছনে নষ্ট করেন। তার স্ত্রীকে মুকুল প্রায়ই অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। প্রবাস থেকে ফিরে তিনি মুকুলকে অনেক বুঝিয়েছেন কিন্তু কথা শুনেনি। উপরন্তু তার যৌন হয়রানির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। স্ত্রীকে যৌন নির্যাতনের কারণেই তিনি মুকুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার পরিচিত বন্ধু পরেশ চন্দ্র শীল ওরফে নওমুসলিম নাজমুল হোসেনকে ১৬ হাজার টাকার বিনিময়ে পরিকল্পনায় জড়ান।

টাঙ্গাইল পিবিআই কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি ও পিবিআই কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে