জ্বালানি সংকট ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে কদর বেড়েছে গোবরের ঘুঁটের
প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে জ্বালানি সংকট ও ক্রমাগত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গ্রামীণ গৃহবধূদের রান্না-বান্নার কাজে ব্যবহৃত জ্বালানিসাশ্রয়ী গোবরের ঘুঁটের কদর বেড়েছে বহুগুণ। মূলত আদিকাল থেকেই এখানকার স্থানীয়দের কাছে এটি গোবরের গৈটা, মুইঠ্যা বা গোবরের আঁটি হিসেবে বেশি সুপরিচিত।
সূত্রমতে, এক সময় গ্রামীণ দরিদ্র গৃহবধূরা বন-জঙ্গলের লতা-পাতা কুড়িয়ে তা রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় নানা কারণে বাড়ির পাশের বন-জঙ্গল উজাড় হওয়ার কারণে তীব্র জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে ধনী ও অপেক্ষাকৃত বড় গৃহস্থ পরিবারের গৃহবধূরা কাঠের লাকড়ি বা সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে রান্না-বান্নার কাজ করতে পারলেও চরম বিপাকে পড়েছেন গরিব ও নিম্নআয়ের গৃহবধূরা। অনেকেই গ্যাস বা গাছের কাঠ-খড়ি কিনতে না পেরে গৃহপালিত গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরি করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। হাতে তৈরি করা ওইসব গোবরের লাকড়ি বা ঘুঁটে দিয়েই চলে তাদের সারা বছরের রান্নার কাজ।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, গ্রামীণ দরিদ্র গৃহবধূরা গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরি করছেন। কেউ বাড়ির উঠানে কিংবা রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় বসে ঘোমটা টেনে পরম যত্নে তৈরি করছেন এসব গোবরের ঘুঁটে। এসব গোবরের ঘুঁটে তৈরির প্রধান উপকরণ হচ্ছে-গবাদিপশুর গোবর, পানি, পাটখড়ি ও ধানের তুষ বা কুড়া।
উপজেলার নারায়ণ ডহর গ্রামের গৃহবধূ শর্মীলা শীল, জরিনা আক্তার জানান, তারা সারা বছরই গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরি করে থাকেন। কেননা, গোবরের তৈরি লাকড়িগুলো অনেক ভালো জ্বলে এবং মাটির চুলাতেও রান্না করতে অনেক ভালো লাগে। তাই গোবরের লাকড়ি বা ঘুঁটেই তাদের একমাত্র ভরসা। এতে বাড়তি খরচও অনেক কম হয়। ফলে এখন উপজেলার সর্বত্রই গোবরের ঘুঁটের চাহিদা ও কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম শাহজাহান কবির জানান, গোবর দিয়ে তৈরি ঘুঁটে বা লাকড়ি এক প্রকার জ্বালানি। যা তৈরি করা খুবই সহজ ও সাশ্রয়ী। তাই গ্রামীণ দরিদ্র নারীরা বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গোবরের ঘুঁটে ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।