ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় শতবর্ষী কাশীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরের ওপর চারমাস ধরে বিশাল একটি আকাশি গাছ ভেঙে পড়ে আছে। বিদ্যালয়ের ওপর পড়ে থাকা গাছটি শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। আর এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের ঘরটিতে চলছে খুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। দীর্ঘদিন এ অবস্থার পরও দুই প্রতিষ্ঠানের ঠেলাঠেলিতে গাছটি অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টির অবস্থান উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে কাশীনগর গ্রামে। ১৯২৮ সালে বিদ্যালয়টির পাঠকার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বিদ্যালয়ে চারশ' খুদে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে টিনশেড ঘরে পাঠদান চলত। এরপর একটি পাকা ভবন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরেই পাঠদান চালাতে হচ্ছে শিক্ষকদের। গত চার মাস আগে ঝড়ে ঘরটিতে বিশাল আকৃতির একটি আকাশি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে চালাসহ গাছটি অনেকটা ভেতরে ঢুকে গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কণিকা, নুসরাত, শাহী, রিহানমিয়া ও রিফাত আহম্মেদ জানায়, টিনের ঘরে ক্লাস করতে ভয় লাগে। এখন ঘরের ওপর গাছ পড়ায় বেশি ভয় হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের ওপর পড়ে থাকা গাছটি শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
কাশীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, 'গাছটি পাশের উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গায়। তাদের বলার পর গাছটি না কেটে সময়ক্ষেপণ করছে। যেহেতু আমাদের গাছ না, তাই আমরা কাটতে পারি না।'
কাশীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান গাছ না কাটার বিষয়ে বলেন, 'এই গাছ কি আমি একা কাটতে পারব। কোনো প্রসেস না করে এটা সরানো যাবে না। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে কাটতে হবে। এতদিন বিদ্যালয়ের কোনো কমিটি ছিল না। এখন নতুন কমিটি হয়েছে। তাদের নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেব কি করা যায়।'
নান্দাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফজিলাতুন্নেছা বলেন, 'যেহেতু গাছটি উচ্চ বিদ্যালয়ের তাই ঝুঁকি জেনেও আমরা কাটতে পারি না। আমাদের গাছ হলে রেজুলেশন করে কাটতে পারতাম।'
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, 'আমি খবর নিয়ে দ্রম্নত গাছটি অপসারণের ব্যবস্থা করব।'