ইপিজেডের বিষাক্ত বর্জ্য
কুমিলস্নার ৫৫ গ্রামের কৃষকের হাহাকার থামছে না
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর মানববন্ধনে পুলিশের বাধার অভিযোগ
প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না
কুমিলস্নায় ইপিজেডের বিষাক্ত তরল বর্জ্যে ৫৫টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষজন বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে প্রতিকার চেয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। এরই মধ্যে সোমবার কুমিলস্না দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায়ী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে 'বিষাক্ত বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের জনগণের ক্ষতিপূরণ আদায় ও মহানগরের প্রাকৃতিক খালের সঙ্গে বিষাক্ত তরল বর্জ্যের সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের দাবিতে' পূর্বঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ ও স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাধায় পন্ড হয়ে যায়। পরে প্রতিবাদী জনগণ শ্রীনিবাস এলাকায় ঘুইঙ্গাজুড়ি খালের ব্রিজের ওপর এই কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- কুমিলস্না দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায় ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তার হুসাইন, সমবায়ী নেতা সিরাজুল হক, ইসমাইল মজুমদার, ইউসুফ আলী মীর পিন্টু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সুমন, ওমর ফারুক চৌধুরী, মাসুদ করিম, হাফেজ বেলাল হোসাইন, মিনহাজ হোসেন শামীম, আবুল কালাম আজাদ খোকা, দেলোয়ার হোসেন, মোস্তফা কামাল প্রমুখ। মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নানা শ্রেণিপেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের জন্য সদর দক্ষিণ উপজেলার জেলখানাবাড়ি এলাকায় ঘুইঙ্গাজুড়ি খালের পাড়ে একত্রিত হয়েছিলেন। বিষয়টি তারা পুলিশকেও জানান। কিন্তু বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা সমবেত হতে থাকলে পুলিশ ও স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এতে বাধা দেয়।
কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী। কর্মসূচিতে বাধার কারণে তিনি অংশ নিতে পারেননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কুমিলস্না ইপিজেড এবং এর বাইরের দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক (বিষাক্ত) তরল বর্জ্য আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষকদের ফসলের জমি, খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা জীবন বাঁচাতে দীর্ঘ বছর ধরে নানা আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করে আসলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না, এটা ছিল ৫৫টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্নে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। এতেও বাধার মুখে পড়তে হলো। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার জানান, এখানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের অনুমতি ছিল না। তবে মানববন্ধনের খবর পেয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছে। এতে শান্তিভঙ্গের আশঙ্কায় সেখানে মানববন্ধন করতে দেওয়া হয়নি। তাই তারা বিকল্প স্থানে এই কর্মসূচি পালন করেছে।