পহেলা বসন্ত ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ বুধবার। দুই দিবস ঘিরে জমে উঠেছে দেশের ফুলবাজার। বেশি দাম পাওয়ার আশায় বিভোর ফুলচাষিরা। তবে দামের কারণে ফুলে হাত দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে ক্রেতা-সাধারণের। অনকে জায়গায় পাইকারি ১৫ টাকার গোলাপ ৩৫ এবং খুচরা ৩৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
ঝিনাইদহ থেকে তারেক মাহমুদ জানান, দিনটি বরণ করতে উন্মুখ থাকেন তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সি মানুষ। ফুলছাড়া এই দিনটি যেন একেবারেই বেমানান। ফলে অন্য সময়ের থেকে এই দিন ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণে। যার কারণে ব্যস্ততা বাড়ে ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের। অতিরিক্ত চাহিদার কারণে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে ঝিনাইদহের দুটি বড় ফুলবাজারে।
জেলার সব থেকে বড় ফুলের পাইকারি বাজার জেলা সদরের গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অন্য সময়ের থেকে দুই-তিনগুণ বেশি দামে ফুল বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে পাইকারি একটি গোলাপ আকার ভেদে ৩৫-৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর খুচরা বিক্রি হয়েছে ৩৫-৫০ টাকা। এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে একই গোলাপ বিক্রি হয়েছিল ১৫-২০ টাকা। এ ছাড়া জারবেরা বিক্রি হয়েছে ১৫-২৫ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ৫-৮ টাকা। রজনীগন্ধার স্টিক বিক্রি হয়েছে ৮ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ৩-৫ টাকায়। একই সময় গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকা ধোপা। যে গাদাফুল দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ১০০-১৫০ টাকা ধোপা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে ফুটে আছে লাল, হলুদ ও কমলা রঙের জারবেরা। ফুটে আছে রং বে-রঙের গোলাপ, রজনীগন্ধা, গস্নাডিয়াস ও গাদা ফুল। ফুটে থাকা ফুলের রঙে স্বপ্ন রাঙাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার ফুলচাষিরা। প্রতিবছর বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১ ফেব্রম্নয়ারি ও ২৬ মার্চ এলেই এই জেলার ফুলচাষি ও ফুলকর্মীদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে এই এলাকায় উৎপাদিত ফুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফলে ফুলের বাড়তি চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পার করেন জেলার ফুলচাষিরা। ব্যবসায়ী ও কৃষকরা বলছেন, ঝিনাইদহে গাদা ফুলের পরিমাণ সব থেকে বেশি। দেশের গাঁদা ফুলের মোট চাহিদার ৬৫ শতাংশ পূরণ করে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এই জেলার উৎপাদিত ফুল।
চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জেলা সদরে ৩৭ হেক্টর, কালীগঞ্জে ১৫০ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৪৫ এবং মহেশপুরে ১৫৯ জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের রং-বেরঙের ফুলের চাষ হয়েছে। ফুলের মধ্যে রয়েছে- গোলাপ ১৬.২৬ হেক্টর, গাদা ১৩৮ হেক্টর, রজনীগন্ধা ৫৭.২৬ হেক্টর, জারবেরা ২১ হেক্টর, চন্দ্রমলিস্নকা ৭ হেক্টর এবং ৮ হেক্টর জমিতে গস্নাডিয়াস ফুলের চাষ হয়েছে। সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় জেলা সদরের গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে। যে কারণে এই এলাকাটি অনেকের কাছে ফুলনগরী বলে পরিচিত। ১৯৯১ সালে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সৌখিন কৃষক ছব্দুল শেখ সর্বপ্রথম ফুল চাষ করেন। তিনি ওই বছর মাত্র ১৭ শতক জমিতে ফুল চাষ করে ৩৪ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেন। এরপর থেকে এলাকায় বিভিন্ন জাতের ফুল চাষের বিস্তার শুরু হয়। বর্তমানে জেলার কয়েক হাজার কৃষক ফুল চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষি টিপু সুলতান জানান, ২০১৭ সালে ৫৫ লাখ টাকা খরচ করে ৫ বিঘা জমিতে জারবেরা ফুলের চাষ করেছিলেন। বর্তমানে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ রয়েছে। এর মধ্যে গোলাপ রয়েছে ৫ বিঘার মতো। বিদেশি ফুল জারবেরা কাটার পরও ১ সপ্তাহের বেশি সময় তাজা থাকে। রং আর বৈচিত্র্যে অনন্য জারবেরা ফুলের তুলনা নেই। এই ফুল চাষে ১ বিঘাতে খরচ ১০-১৫ লাখ টাকা। তবে ৪ বছর একনাগাড়ে ফুল বিক্রি করা যায়। ফলে লাভ হয় ৩-৪ গুণ।
বালিয়াডাঙ্গা বাজার এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেরা গান্নার ফুল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর থেকে শত শত কৃষক তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত ফুল ভ্যান, স্কুটার ও ইঞ্জিনচালিত বিভিন্ন পরিবহণযোগে নিয়ে আসছেন। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রং বে-রঙের ফুলে ভরে যায় এই বাজার দুটি।
কোটচাঁদপুর উপজেলার তালিনা গ্রামের কৃষক সনজিত দাস জানান, আড়াই বিঘা জমিতে গাদা ফুলের চাষ করেছেন। এরই মধ্যে ৫০ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে বিক্রি করেছেন দেড় লাখ টাকার ফুল। এখনো অর্ধলাখ টাকার ফুল বিক্রি করা যাবে। ওই গ্রামের কৃষাণী সীমা রানী জানান, প্রায় ১২ বছর ধরে ফুলের মালা তৈরি করার কাজ করছেন। গাঁদা ফুলের প্রতি ঝোপায় তার আয় হচ্ছে ১২ টাকা। এভাবে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ আয় করেন।
সদর উপজেলার গান্না বাজার ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানান, এখন ফুলের দাম বেশ ভালো রয়েছে। দাম ভালো পেলে ১১ ফেব্রম্নয়ারি থেকে আগামী ২১ ফেব্রম্নয়ারি ও ২৬ মার্চ পর্যন্ত সদর, কালীগঞ্জ, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজার থেকে প্রায় ১৫-২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে তার ধারণা।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী জানান, দাম ভালো পেতে ক্ষেত থেকে তোলার পর ফুল সতেজ রাখা জরুরি। এ জন্য জারবেরা ক্ষেত থেকে কাটার পরই পানিতে রাখতে হবে। গোলাপের ক্ষেত্রেও পানির ভেতর রেখে হালকা পানি স্প্রে করতে হবে। গাঁদা ফুলও তোলার পর খেয়াল রাখতে হবে যেন, ফুলে কোনো আঘাত না লাগে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, ঝিনাইদহের মাটি ও আবহাওয়া ফুলচাষের জন্য উপযোগী। ফুলচাষ এই অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়য়ে বিরাট ভূমিকা রাখছে। পদ্মা সেতু হওয়ায় খুব সহজে অল্প সময় ফুল ও কৃষি পণ্যবাহী গাড়ি ঢাকা-চট্টগ্রাম পৌঁছে যাচ্ছে। এ ছাড়া ফুল সংরক্ষণের জন্য বালিয়াডাঙ্গা বাজারে ফুল এসেম্বলি সেডের সঙ্গে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রুম করা হয়েছে। যেখানে ফুল ও ফলের বীজ সংরক্ষণ করা যাবে।
চকরিয়া (কক্সবাজার) থেকে মুহাম্মদ মনজুর আলম জানান, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন ঘিরে চট্টগ্রাম ও পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ফুল ব্যবসায়ীরা চকরিয়ার 'গোলাপ নগর' খ্যাত বরইতলী থেকে আগভাগেই নানা প্রজাতির ফুল সংগ্রহ করছেন। অনেক ব্যবসায়ী ফুলচাষিদের কাছে আগাম অর্ডার দিয়ে রেখেছেন যাতে ফুল সংকটে পড়তে না হয়। এ বছর ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। সব মিলিয়ে এখানকার ফুলচাষিদের চোখ-মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। এবার চাষিরা কোটি টাকার ফুল বিক্রি করার স্বপ্ন দেখছেন।
এ বছর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক থাকায় বেশ খুশিমনে ফুল চাষে নামেন চাষিরা। এতে চলতি বছর পুরোদমে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসে 'গোলাপ নগর' বরইতলী ইউনিয়নে। চকরিয়ার বরইতলী থেকে পাইকারি মূল্যে কিনে চট্টগ্রাম শহরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে ফুল বিক্রি করেন আড়তদার অনেক ব্যাবসায়ী। বরইতলী থেকে তারা প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ হাজার ফুল কেনেন। বিশেষ দিবসে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবারের ভালোবাসা ও মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আগাম অর্ডার দেওয়া হয়েছে ৮০ হাজার গোলাপ ও গস্নাউডিওলাস ফুলের।
বরইতলী একতা বাজার এলাকার ফুলচাষি জসিম বলেন, 'আমি একসময় তামাকের চাষ করতাম। তখন মুনাফাও ভালো পেয়েছিলাম। কিন্তু হাড়ভাঙা খাটুনি ও দিন-রাত পরিশ্রমের কারণে শরীরের অবস্থা তেমন ভালো যাচ্ছিল না। তাই অন্যের দেখাদেখিতে তামাক চাষ ছেড়ে গত তিন বছর ধরে উদ্যোগী হই ফুল চাষে। এবারও দুই কানি জমিতে গোলাপ ও গস্নাউডিওলাস ফুল চাষ করেছি। ফলনও ভালো হওয়ায় বেশ খুশি লাগছে।
ফুল বাগানশ্রমিক বরইতলী পূর্ব পাড়ার রহিমা বেগম ও আমেনা খাতুন বলেন, দেশে ফুলের চাহিদা ভালো থাকায় ফুল বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে প্রতিদিন টাকা আয় করছেন। এতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে অভাব-অনটন ছাড়াই সুখে আছেন।
সরেজমিন ফুলচাষি ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বরইতলী ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক বাগান থেকে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোলাপ ও গস্নাডিওলাস ফুল সরবরাহ করা হয় পাইকারি আড়তদারদের কাছে। বিশেষ দিবসগুলোতে এসব বাগানের ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রথমদিকে অল্প জমিতে নানা জাতের ফুলের চাষ হলেও বর্তমানে বরইতলী ইউনিয়নে ১০৫ একর জমিতে চাষ হচ্ছে ফুলের।
বরইতলী ফুলবাগান মালিক সমিতির সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর প্রাকৃতিক পরিবেশ ফুল চাষের অনুকূলে থাকায় পুরোদমে ফুলচাষে নেমেছেন শত শত চাষি। তাই আশা করছেন, এবারের ভালোবাসা ও মাতৃভাষা দিবসে গোলাপ, গস্নাডিওলাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল বিক্রি হবে কোটি টাকার কাছাকাছি।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাসিম হোসেন বলেন, বরইতলী ইউনিয়নে চলতি বছর ৮০ হেক্টর জমিতে গোলাপ, ২০ হেক্টরে গস্নাউডিলাস ও আরও ৫ হেক্টরসহ মোট ১০৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করছেন চার শতাধিক চাষি। এবারের ভালোবাসা দিবসসহ সবকটি দিবসে ফুল বিক্রিও ভালো হবে। এতে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হবেন চাষিরা।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জমান বলেন, 'আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে তাদের জমিতে সর্বনাশা তামাক চাষ করতেন। তামাক চাষের কারণে যেভাবে পরিবেশ ও শারীরিক ক্ষতি হয়, তা আমি তাদের বিভিন্নভাবে বোঝাতে সক্ষম হই। তাই তারা কয়েক বছর ধরে তামাক চাষ ছেড়ে ফুল চাষের দিকে আগ্রহ বাড়িয়েছেন। এতে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে জীবনযাপন করছেন।
চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) থেকে মোহাম্মদ কমরুদ্দিন জানান, গাঁদা, বাসন্তি গাঁদা, ইন্ডিয়ান খাসি গাঁদা, লাল গাঁদা, লাল চেরী, সাদা চেরী, কালার স্টিক, চন্দ্রমলিস্নকা, চায়না বেলি, জবা, বোতাম, গস্ন্যাডিওলাস, জিপসি, গোলাপ, ডালিয়া ও স্বর্ণপুটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল দুলছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ-সাতকানিয়াবেষ্টিত চর খাগরিয়ার বিলে। দেখেই মনে হয় রঙিন ফুলের এক রাজ্য।
গত কয়েক দশক ধরে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করায় চর খাগরিয়া ইউনিয়নের চর খাগরিয়া বিলটি ফুলের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতি মৌসুমে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে এই বিল থেকে সারাদেশে কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। ফুল চাষ করে ইতোমধ্যে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে এলাকার শতাধিক পরিবার। এজন্য ধীরে ধীরে স্থানীয় কৃষকরা ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ফুলের মৌসুমে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ফুল তোলা ও মালা গাঁথার কাজে নিয়োজিত শত শত নারী ও শিশুসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার খাগরিয়া এলাকার চর খাগরিয়া গ্রামে কোন অনাবাদি জমি খালি নেই। বিশাল মাঠজুড়ে হরেক রকম ফুল চাষে ভরপুর বিলগুলো। যত দূর চোখ যায়, শুধু নানা রংয়ের হরেক রকম ফুল আর ফুল। মাঠে ফুল তোলার কাজে ব্যস্ত সময় ফুল চাষিসহ এলাকার নারী ও শিশু শ্রমিক।
ফুলচাষি মোহাম্মদ রিদুয়ানুল ইসলাম জানান, এ বছর ২ কানি (৮০ শতক) জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ করেছেন। বেশিরভাগ ১৪ ফেব্রম্নয়ারিকে টার্গেট করে ফুল চাষ করেন। এই মৌসুমে খরচ বাদ দিয়ে লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে।
ফুলের বাগান হতে ফুল তুলতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশুশ্রমিক ও মহিলা শ্রমিকরা আসেন এই এলাকায়। অনেক সময় ছুটির দিনে স্কুলপড়ুয়া অনেক ছাত্রছাত্রীও ফুল তোলার কাজে অংশ নেয়। বিনিময় তারা পায় দুই থেকে তিনশ' টাকা। ফুলগুলো চট্টগ্রামের ফুলের দোকানিরা মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তারা নিজেরাও সরবরাহ করে থাকেন।
ফুলচাষি আবুল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামে প্রচুর পরিমাণ ফুল চাষ হয়ে আসলেও উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ফুলচাষিদের প্রতি উন্নত পরিসরে সেবা প্রদান করা হয় না। এসব ফুলচাষি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এবং পস্নাস্টিকের ফুলের আগ্রাসন রোধ করতে পারলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ফুল বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফউদ্দিন বলেন, ফুল চাষের বেশিরভাগ এলাকাগুলো চন্দনাইশের পাশে হলেও ভৌগলিক সীমানা সাতকানিয়া উপজেলায়। চর খাগরিয়া এলাকা যেহেতু সাতকানিয়া এলাকায় সেহেতু আমাদের করণীয় কিছু নেই।