জীবনযুদ্ধে হার না মানা টুলির পাশে রাজশাহী জেলা প্রশাসক
প্রকাশ | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
রাজশাহী অফিস
পৃথিবীতে জন্মের পর থেকে আমৃতু্য কেউ সুখে বসবাস করেন আবার কাউকে সারা জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। তাদের জীবনের সংগ্রাম যেন শেষ হয় না। এমনই জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক সংগ্রামী নারী চরিত্র-নগরীর টুলি বেগম। স্বামী-সন্তান ছেড়ে গেছে অনেক বছর আগেই। এখন ৪৫ বছর বয়সী টুলি বেগম এক অসুস্থ মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে ভাড়া থাকেন নগরীর রায়পাড়া বস্তি এলাকায়। মাথার ওপর যেই আশ্রয় আছে, সেটিরও প্রতি মাসে ভাড়া দিতে হয়। মেয়েটাও প্রায় সব সময় অসুস্থ থাকেন, তার ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু অভাবের তাড়নায় জীবিকার তাগিদে রিকশা চালিয়ে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে ঠিকঠাক তিন বেলা খাবার জোটে না। এখন কিভাবে বাড়ি ভাড়া দিবেন এবং মেয়ের চিকিৎসা করাবেন তা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছিল টুলি বেগমের। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জীবন যুদ্ধে হার না মানা টুলি বেগমের সংগ্ামী জীবন-যাপনের বিষয়টি জানতে পেরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তাৎক্ষণিক তাকে গত শনিবার সন্ধ্যায় নিজ বাংলোতে দাওয়াত দিয়ে শাড়ি, কম্বল, খাদ্য দ্রব্য ও আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও দ্রম্নত সময়ের মধ্যে পবা উপজেলায় বাড়ি করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সরকার অসীম কুমার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আনিসুল ইসলাম, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. শামসুল ইসলাম প্রমুখ।
এ বিষয়ে টুলি বেগম জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টায় থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩শ' টাকা জমা চুক্তিতে রিকশা চালান। মেয়ে চালক বলে রিকশায় অনেকেই উঠতে চায় না। তবুও মানুষের কাছে হাত না পেতে তিন চাকার রিকশায় ভর করে, দিন শেষে যা আয় হয় সেটা দিয়েই অনেক কষ্টে সংসার চালান।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, টুলি বেগম অবিরাম জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক নারী চরিত্র। দারিদ্র্যের কশাঘাতের সঙ্গে লড়াই করে প্রতিনিয়ত বেঁচে আছেন তিনি। এক সময় তিনি রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করেও সংসার চালিয়েছেন। এখন তিনি জীবিকার তাগিদে মানুষের কাছে হাত না পেতে, নিজেই রিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। তাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।