চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা মোহনার শাখাজুড়ে ডাকাতিয়া নদীতে জোয়ার ভাটার খেলার মাঝে হাজীগঞ্জ অঞ্চলের স্থানীয় কৃষকরা প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চরজুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছে। গত প্রায় ৫ বছর পূর্বেও আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় তাদের ফসল নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে পারেনি। এরপর থেকে সঠিক সময় ফসল ঘরে তুলতে পেরে চাষাবাদের আগ্রহ বেড়েছে। এবার ডাকাতিয়া নদীর পানি দ্রম্নত নেমে যাওয়ায় চর এলাকায় স্থানীয় কৃষকরা ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ একর জায়গায় ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফসল উৎপাদন করে ঘরে আনা সম্ভব বলে জানান এখানকার কৃষকরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত বলাখাল, অলিপুর, উঠতলি পর্যন্ত প্রায় বৃহত্তর চর এলাকায় স্থানীয়রা তাদের নিজস্ব জমিসহ নদীর দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন জাতের ইরি-বোরো চাষাবাদ করতে পেরেছে। মে-জুন মাসে বর্ষার আগাম জোয়ারের পূর্বে যদি ধান কাটতে পারে, তাহলে তাদের কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তোলা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা। এর আগ পর্যন্ত যতটুকু শ্রম ও ব্যয়, তা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন গুণতে হবে বলেও তারা বিশ্বাস করেন। চরজুড়ে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদকারি কৃষক অলিপুর গ্রামের বেপারী বাড়ির হূমায়ন এ বছর তিন গোন্ডা পর্যন্ত চারা রোপণ করেছেন। একই বাড়ির রুহুল আমিন ১২ গোন্ডা পর্যন্ত লাগিয়েছেন। একই গ্রামের বিলস্নাল হোসেন প্রায় ৩০ গোন্ডা পর্যন্ত চাষাবাদ করেছেন। এভাবে প্রায় ২৫-৩০ জন কৃষক ডাকাতিয়া নদীর কোলজুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছেন। তারা বেশি ভাগ বি-২৮ ও বি-২৯ জাতের ধান লাগিয়েছেন। এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলেন, ডাকাতিয়া নদীর দুই পাশজুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ আমাদের লক্ষ্যমাত্রার বাহিরে। এরপরও যারা বুঝে কিংবা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বি-২৮ ধান লাগিয়েছে, তাদের ফসল আগামী চার মাসের মধ্যে উঠবে। আর যারা বি-২৯ ধান লাগিয়েছে, তাদের ছয় মাস অতিবাহিত হতে পারে। তখন জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।