ময়মনসিংহ ও খুলনার সড়কে লাঠি হাতে পরিবহণ থামিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় ৮২ জন চাঁদাবাজকে আটক করেছের্ যাব। এর মধ্যে ময়মনসিংহে ৫০ জন ও খুলনায় ৩২ জনকে আটক করা হয়। আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও বু্যরো প্রধানের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
ময়মনসিংহ বু্যরো জানায়, লাঠি হাতে পরিবহণ থামিয়ে ময়মনসিংহের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজির ঘটনায় ৫০ জন চাঁদাবাজকে হাতে-নাতে আটক করেছের্ যাব-১৪।র্ যাব বলছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির অন্যতম কারণ হচ্ছে পরিবহণে চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজি বন্ধে তাদের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ কেন্দ্রিক প্রায় ২০ হাজার বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহেন্দ্র চলাচল করে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে। এসব পরিবহণ থেকে নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন টোকেনের মাধ্যমে লাঠি হাতে নিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে চাঁদা উত্তোলন করেন। এসব নিয়ে প্রায় সময় সংবাদও প্রকাশ হয়। বিষয়টির্ যাবের নজরে আসায় গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নগরীর পাঁচটি স্পটে অভিযান চালিয়ে ৫০ জন চাঁদাবাজকে হাতে-নাতে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার রশিদ বই, ৬৫ হাজার টাকা এবং লাঠি জব্দ করা হয়।
বুধবার বিকালের্ যাব-১৪-এর অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বলেন, 'সম্প্রতি ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ আসে আমাদের কাছে। এছাড়াও পরিবহণে চাঁদাবাজি নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদও প্রকাশ হয়। যার প্রেক্ষিতের্ যাব নগরীর রহমতপুর বাইপাস মোড়, পাটগুদাম ব্রিজমোড়, শম্ভুগঞ্জ, মুক্তাগাছা এবং তারাকান্দার কাশিগঞ্জ থেকে হাতে-নাতে ৫০ জন চাঁদাবাজকে আটক করে। পরিবহণে তাদের চাঁদাবাজির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বেড়েছে। সাধারণ মানুষ তাদের হয়রানির শিকার হচ্ছে। আটকদের বিরুদ্ধে পরিবহণ চালকরা বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলেই তাদের আদালতে তোলা হবে।'
এদিকে, আমাদের খুলনা অফিস জানিয়েছে,র্ যাব-১ অভিযান চালিয়ে সড়ক ও মহাসড়কে সবজিসহ অন্যান্য পণ্যবাহী গাড়ি হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনের সময় ৩২ জন চাঁদাবাজকে হাতে-নাতে আটক করেছে। গত বুধবার ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা আলামতসহ তাদের আটক করা হয়।
বিষয়টির্ যাব-১-এর মিডিয়া সেলের প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংর্ যাব-১ জানায়, এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামি, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্নোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারিদের আটক করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছের্ যাব। সম্প্রতি ঢাকাসহ সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহনে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পৌঁছানোর সময় নামে-বেনামে ভুয়া রশিদ অথবা কখনো কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ চাঁদাবাজি করা হয়। পণ্য উৎপাদনের স্থান হতে পাইকারি বাজারে পরিবহণের সময় সড়কে ধাপে ধাপে চাঁদা দেওয়ার কারণে বেড়ে যাচ্ছে পণ্যের দাম। যার মাশুল গুনতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের। সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগের বিষয়টি সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় ব্যাপক আলোচিত হয়। তাই জনদুর্ভোগ দূর করতের্ যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের নির্দেশনায় রাজধানীসহ সারাদেশের্ যাবের বিভিন্ন ইউনিট অভিযান চালায়। এরই ধারাবাহিকতায়র্ যাব-১ বুধবার গভীর রাতে ঢাকার উত্তরাসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে ৩২ জনকে আটক করা হয়। এ সময় আটকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের নগদ ১,০২,৮৬৫/- টাকা, ৬টি টর্চলাইট, ৩টি টার্গেট লাইন, ১টি চার্জার লাইট, ২৯টি চাঁদা আদায়ের রশিদ, ৪টিট রিফ্লেক্টিং বেস্ট জ্যাকেট, ২টি লাঠি, ২৫টি মোবাইল ফোন এবং ১টি হেডফোন উদ্ধার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা চাঁদাবাজির সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।