শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
বাঁধের কাজে ধীরগতি

বেপরোয়া বাল্কহেড চলাচলে যমুনায় অসময়ের ভাঙন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অসময়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যমুনা নদীর ভাঙন -যাযাদি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি, জালালপুর ও কৈজুরি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে হাটপাচিল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে যমুনা নদীর ব্যাপক ভাঙন। গত দুই মাসে এ ভাঙনের তান্ডবে তিনটি ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের অন্তত দুই শতাধিক বাড়িঘর ও তিনশ' বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামগুলি হলো- ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, পাড়ামোহনপুর, জালালপুর, পাকুরতলা, সৈয়দপুর ও হাটপাচিল। এছাড়া যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে ৭টি গ্রাম। এগুলি হলো- ঘাটাবাড়ি, বাঐখোলা, দাদপুর, কুচিয়ামারা, সন্তোষা, কোচগাঁও ও ভেকা গ্রাম।

এ বিষয়ে জালালপুর গ্রামের আব্দুল হাই, তয়জাল সরকার, আব্দুস সালাম, পাকুরতলা গ্রামের আশরাফ আলী, হাটপাচিল গ্রামের আব্দুল মজিদ জানান, ভাঙনের তান্ডবে সাত গ্রামের অন্তত দুইশতাধিক বাড়িঘর ও তিনশ' বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া আরও ৭টি গ্রাম একেবারে বিলীন হয়ে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। এসব গ্রামের মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিঃস্ব। অনেকের দিন কাটছে ভাঙন এলাকার খোলা আকাশের নিচে। অনেকে আবার অন্যত্র চলে গেছে জীবিকার তাগিদে।

তারা জানায়, এলাকার প্রভাবশালীরা গত বর্ষা মৌসুমে অপরিকল্পিতভাবে যমুনা থেকে মাত্রাতিরিক্ত বালু উত্তোলন করছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর উজান থেকে তোলা সেই বালু পরিবহণে দুই শতাধিক বাল্কহেড উচ্চ গতিতে নদীর এই স্থান দিয়ে ২৪ ঘন্টা চলাচল করছে। এর ফলে তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে যমুনা নদীর পশ্চিম তীরের তলদেশে বালুর স্তর সরে যাওয়ায় এই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

তারা আরও বলেন, ভাঙনরোধে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ বছর আগে তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু ঠিকাদারের ধীরগতিতে কাজ চলতে থাকায় গত ৩ বছরে কিছু সংখ্যক সিসি বস্নক তৈরি ছাড়া কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম বলেন, 'আমি এনায়েতপুর বেড়িবাঁধ থেকে নৌকা নিয়ে ভাঙন এলাকা ঘুরে দেখেছি। তাদের এই কষ্ট লাঘবে ইতোমধ্যেই পানি সম্পদ মন্ত্রী ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে ৩ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত সিসি বস্নক স্থাপন করে তীরসংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করবে। বাকি অংশের ভাঙনরোধে এ বছর ১০ হাজার জিওটেক্স টিউব ব্যাগ ফেলা হবে। এ কাজ শেষ হলে এখনে আর ভাঙন থাকবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে