রাউজানে সবুজ সবজিতে ঢাকা কাশখালীর দুই পাড়
প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
কুয়াশা ঢাকা সকালে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কৃষক-কৃষাণীদের ব্যস্ততা। সবাই ব্যস্ত নিজ নিজ ক্ষেতখামারে। ক্ষেত থেকে কেউ উঠাচ্ছেন ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমসহ নানা জাতের শাক। আবার কারো কারো ব্যস্ততা মরিচ, টমেটো, আলু, শিমসহ নানা জাতের সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায়।
কুয়াশা ঢাকা সকালের এমন দৃশ্য রাউজান পৌরসভার আট নং ওয়ার্ডের শরীফপাড়া এলাকার কাশখালী খালের দুই পাড়ে। এখানে কাশখালীর খাল ও পৌরসভা থেকে বসানো ডিপ টিউবওয়েলে যতটুকু পানি পাওয়া যায় সেটুকু দিয়ে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সারা বছর জুড়ে ক্ষেত খামার করেন এলাকার কয়েকশ' কৃষক। এই এলাকায় উৎপাদিত মৌসুমি সবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে যায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারে।
এদিন সকালে জমি থেকে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম কেটে অন্যান্যদের মতো রাস্তায় স্তূপ করছিলেন কৃষক শহীদুল ইসলাম সুমন। তিনি বলেন, তার ক্ষেত থেকে উঠানো ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম যাবে হাটহাজারীর বিভিন্ন বাজারে। তিনি বেপারীর কাছে পাইকারিতে ফুলকপি বিক্রি করেছেন ২০ টাকা কেজিতে।
এই এলাকার কৃষকদের সংগঠক কুতুব উদ্দীন বলেন, কাশখালী খালের দুই পাড়ের কৃষকদের নিয়ে রয়েছে একটি কৃষক সমিতি। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এই সমিতির সদস্যরা সারা বছর চাষাবাদে মাঠে থাকেন। তিনি বলেন, কৃষকদের প্রাণ হচ্ছে পানি। এখানে খাল ও ডিপ টিউবওয়েলে যতটুকু পানি পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে মাত্র পঞ্চাশ একরের মতো জমিতে ফলমূল ফলানো যায়। কয়েকশ' একর জমিতে চাষাবাদের সুযোগ থাকলেও পানির অভাবে করা যায় না। পরিকল্পিতভাবে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা গেলে খালের দুই পাড়ে ফলমূল উৎপাদনের মাধ্যমে এখানে শষ্য ভান্ডার গড়ে তোলা যেত।
কৃষক সমিতির সভাপতি আবদুস শুক্কুর বলেন, এই এলাকার কৃষকরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষি বিভাগের লোকজনের কাছ থেকে সব সময় কৃষিকাজে অনুপ্রেরণা পেয়ে আসছে। পৌর মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ সংসদ সদস্যের পরামর্শে কৃষক সমিতির জন্য জায়গা দিয়েছেন। কৃষিপণ্য পরিবহণের জন্য রাস্তা সংস্কার করে দিয়েছেন। এসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে কৃষকরা শরীফপাড়া এলাকাসহ কাঁশখালী খালের দুই পাড়ে মৌসুমি ফলমূল উৎপাদন করছেন। আরও বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা গেলে এই এলাকার কৃষিকাজ সম্প্রসারণ করা যাবে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুসারে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে নানা জাতের শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হয়। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৫৮৫ টন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, রাউজানের সংসদ সদস্য কৃষকবান্ধব। তার নির্দেশনায় কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছেন। এই কর্মকর্তার অভিমত এখানে উৎপাদিত সব ধরনের সবজি বিষমুক্ত নিরাপদ।