মধ্যনগর ইউএনও অফিসের ২ সহকারীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিপদগ্রস্ত এক কৃষাণীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই দুই কর্মচারী হলেন মধ্যনগর ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা ও আরেকজন অফিস সহকারী নূরুল আমিন মোলস্না।
ওই কৃষাণীর অভিযোগ, অফিসের কাজের পাশাপাশি শামসুদ্দোহা ও নুরুল আমিন মোলস্নার কাজ হলো যারা দাপ্তরিক কাজে ভুক্তভোগী হয়ে ইউএনও'র কাছে যাবে তাদের বেশির ভাগকে নিজেদের শিকার বানিয়ে ইউএনও'র সামনে হাজির করা। পরে সেসব ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কাজের বিনিময়ে ঘুষের টাকা নেন শামসুদ্দোহা ও মোলস্না।
গত ৫ জানুয়ারি মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমার কাছে যান উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের এরনবিলের দুলাশিয়া মৌজায় গড়াকাটা গ্রামের কৃষাণী জমিলা খাতুন। তার অনুমোদিত সেচ পাম্প (লাইসেন্স নম্বর: ৩৩২) সীমানার ভেতরে একই গ্রামের অবৈধ সোলার সেচ পাম্পের মালিক প্রভাবশালী আব্দুলের সোলার সেচ পাম্প উচ্ছেদের জন্য ইউএনও'র স্মরণাপন্ন হন তিনি। ইউএনও অতীশ দর্শীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শামসুদ্দোহা ও মোলস্না আব্দুলের অবৈধ সোলার সেচ পাম্প উচ্ছেদের জন্য জমিলার কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে ওইদিন ঘুষের ৩০ হাজার টাকা শামসুদ্দোহা ও মোলস্নার হাতে দেন কৃষাণী জমিলা। পরে গত ১৪ জানুয়ারি জমিলা তার এক আত্মীয় পামের তেলীগাঁও গ্রামের আবুল মিয়ার মাধ্যমে মধ্যনগর বাজারের এক মুদি দোকানদারের বিকাশ নম্বরে শামসুদ্দোহার কাছে ঘুষের বাকি আরও ২০ হাজার টাকা পাঠান। এ বিষয়ে ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী শামসুদ্দোহা ও জমিলার আত্মীয় আবুলের বিকাশে ঘুষ লেনদেনের একটি ফোন কলের অডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
এ বিষয়ে কৃষাণী জমিলা খাতুন সোমবার এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি পথের ভিখারি হয়ে গেছি। তিন বছর হয় দৌড়াইছি। সর্বশেষ আমি আরেকজনের কাছ থেকে লাভে (সুদে) টাকা এনে শামছুদ্দো ও মোলস্নাকে দিয়েছি। পারলে আমাকে একটু সাহায্য করেন।
অভিযুক্ত অফিস সহকারী শামসুদ্দোহা বলেন, আবুল একটা বাটপাড়। আমি কারও কাছ থেকে কোনো কাজের কথা বলে টাকা নেইনি। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
আরেক অভিযুক্ত অফিস সহকারী নূরুল আমিন মোলস্নার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, 'আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে, লিখিত অভিযোগ দিলেই আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। একই সঙ্গে এই সেচ পাম্পের বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।'