তাপসহিষ্ণু গমের জাত উদ্ভাবনের দ্বারপ্রান্তে হাবিপ্রবি'র গবেষকরা

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
হাবিপ্রবি গবেষকদের তাপ সহিষ্ণু নতুন গমের জাত উদ্ভাবন বিষয়ক গবেষণা পর্যবেক্ষণ করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার -যাযাদি
তাপ সহিষ্ণু নতুন গমের জাত উদ্ভাবনে অপার সম্ভাবনা দেখাচ্ছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) গবেষকরা। কৃষি অনুষদের কৌলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান এবং তার শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ গবেষণায় উদ্ভাবনের দ্বারপ্রান্তে তাপ সহিষ্ণু তিনটি গমের জাত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিংয়ের অর্থায়নে চলমান এই কাজে গবেষণায় তিনটি জাতের মধ্যে এক জাতের গম রোপণের ১০০ দিনের মধ্যেই ফলন দেয়। এছাড়াও গবেষণায় দেখা যায় গমগাছগুলোর শিষের সংখ্যা ও প্রতি শিষে পুষ্ট দানার সংখ্যা বেশি। নতুন জাতের এই গমগাছ কান্ডে ও ত্বকে পরিণত হওয়া (মোমের আবরণ)-এর পরিমাণ বেশি হওয়ায় এই জাতগুলো অধিক তাপ সহিষ্ণু এবং উচ্চ তাপমাত্রায় উচ্চ ফলন ধরে রাখবে বলে আশা করছেন গবেষকরা। গবেষকরা জানান, ৩টি অনুমোদিত জাত ও একটি অগ্রবর্তী সারির বারি-৪ গমের ক্রস প্রজননের মাধ্যমে এইচএসটিইউ ডাবিস্নউ-১, এইচএসটিইউ ডাবিস্নউ-৪ ও এইচএসটিইউ ডাবিস্নউ-৮ তিনটি নতুন ধরনের তাপ সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়সহ পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, যশোর, সিলেট ও জয়পুরহাট মোট ৮টি এলাকায় তাপ সহিষ্ণু এই জাতগুলোর পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে গম উৎপাদনে তাপমাত্রা একটি অন্যতম সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। আমরা তাপ সহিষ্ণু গমের জাত উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০১২ সাল থেকে গবেষণা করে যাচ্ছি। গত বছর আমরা প্রাথমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। সেই পরীক্ষা থেকে তিনটি অ্যাডভান্স লাইন চিহ্নিত করেছি যেগুলো জাত হিসেবে ছাড়করণ করা যেতে পারে। এই তিন জাতের গমের ফলন পরীক্ষার জন্য এ বছর দেশের ৮ অঞ্চলে গমের জাতগুলো চাষাবাদ করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি যে তাপ সহিষ্ণু উচ্চফলনশীল গমের জাত উদ্ভাবন করতে পারব।' এ গবেষণায় কাজ করা অন্যতম একজন গবেষক কৃষিবিদ মো. জাহিদ হাসান জানান, 'প্রতি বছর এটাকে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ এবং সাবধানতার সঙ্গে অগ্রবর্তী সারিগুলোকে পরিচর্যা ও সঠিক ডাটা নিয়েছিলাম আমরা। চীন থেকে আমদানি করা বিভিন্নরকম মার্কার দিয়ে এই জাতগুলোর ভালো বৈশিষ্ট্য আমরা বের করার চেষ্টা করেছি। আমরা আশাবাদী উদ্ভাবণের দ্বারপ্রান্তে যে জাতগুলো রয়েছে তা আমাদের দেশের জন্য একটা বড় অর্জন হবে। যা গমের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ তাপ সহিষ্ণু এবং হেলে পড়া রোধ করবে।' সম্প্রতি এই গবেষণা পর্যবেক্ষণ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. গোলাম ফারুক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান, কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, জনসংযোগ শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. শৃপতি সিকদার, কলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর মো. আরিফুজ্জামান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মাস্টার্স অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।