সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলোচনায় সাত প্রার্থী

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
গত ৩০ ডিসেম্বর বসেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। আইন অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনেই নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটগুলোর প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে ৫০টি সংরক্ষিত আসন বণ্টন করা হয়। সাধারণত ৬ আসনের বিপরীতে কোনো দল বা জোট একটি সংরক্ষিত আসন পেয়ে থাকে। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। আসন সমঝোতার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনটি মহাজোটের শরিকদল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্বাচনে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এবং ২টি আসনে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এদিকে নির্বাচনের পর থেকেই শুরু হয়েছে আলোচনা ও গুঞ্জন। কে হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে প্রায় ৭-৮ জন মহিলা নেত্রী ঢাকায় দৌড়ঝাঁপ করছেন। এরা হলেন- সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সদ্য সাবেক এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জোবেদা খাতুন পারুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, নব্বইয়ের রাজপথ কাঁপানো নেত্রী মিনারা বেগম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ ও এমবি কানিজ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শামীমা চৌধুরী বীথি, নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুমা বেগম প্রমুখ। মিনারা বেগম রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তার পিতা মরহুম আবু তাহের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার কমিশনার ছিলেন। তিনি ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেতাকর্মীদের নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তিনি বর্তমানে জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যনের দায়িত্ব পালন করছেন। উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম. ইকবাল আজাদের স্ত্রী। দলীয় গ্রম্নপিংয়ের কারণে ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সরাইল সদরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ইকবাল আজাদ ঘাতকদের হাতে খুন হন। এরপর থেকে শিউলী আজাদ রাজনীতিতে যোগদান করেন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। বিউটি কানিজ ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ঢাকা মহানগর) শাখার সাবেক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ যুবমহিলা লীগের সাবেক শিক্ষা ও প্রক্ষিশণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ যুবমহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শামীমা চৌধুরী বীথি ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য। তিনি ইডেন মহিলা কলেজ শাখার (১৯৯১-১৯৯২) সালে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ যুবমহিলা লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। শামীমা চৌধুরী বীথি জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন। অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি, সাপ্তাহিক গতিপথ'র সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখার সাবেক মহিলা সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। রুমা বেগম নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র- সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক নাজির মিয়ার স্ত্রী। তার বাবা লে. গোলাম নূর নাসিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রুমা বেগম ও তার স্বামী নাজির মিয়া দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। রুমা বেগম জানিয়েছেন তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন চাইবেন।