মধুখালীতে ২০ কোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের আশা
প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুলের ম-ম গন্ধে মুখরিত চারদিক। স্বল্পসময়ে উৎপাদনশীল হলেও ভালো দাম না পাওয়ায় কয়েক বছর আগে সরিষার চাষ থেকে অনেক কৃষক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে বর্তমানে কৃষি বিভাগের প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে সার-বীজ প্রদান এবং বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপজেলার চাষিদের। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এক হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সরিষার আবাদ হয়েছে এক হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ২ হেক্টর বেশি। যেখানে ২৪০০ টন সরিষা ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৬, বারি-১৭, বিনা-৪, বিনা-৯, টরি-৭ এবং সম্পদ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে।
এ মৌসুমে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াতে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের ৩ হাজার কৃষকের মধ্যে প্রত্যেককে এক কেজি উন্নত জাতের সরিষা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ডাই্তঅ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও ১০ কেজি এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার মধুখালী হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রকার ভেদে প্রতি মণ নতুন সরিষা ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো পর্যাপ্ত সরিষা ওঠা শুরু হয়নি। এ ছাড়া প্রতি কেজি সরিষার তেল পাইকারি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পূর্ব আড়পাড়া গ্রামের কৃষক মো. আকরাম বলেন, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করে ১১ মণ সরিষা পান। শুকনা সরিষা ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল। আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার আবাদও ভালো হয়েছে।
উপজেলার কোরকদী ইউনিয়নের পাঁচকোরকদী গ্রামের কৃষক কার্তিক কুমার বলেন, এ বছর ভালো দাম পাওয়ার আশায় জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার সার ও বীজ পাওয়ায় সরিষা আবাদে খরচ অনেকটাই কম হয়েছে। গত বছর ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে শুকনা সরিষা বিক্রি করেছিলেন।
মধুখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভির রহমান বলেন, স্বল্পসময়ে উৎপাদনশীল রবিশষ্য হলেও কয়েক বছর আগে বাজারে তেমন চাহিদা ও দাম না থাকায় অনেক চাষিই সরিষা আবাদ বন্ধ করে দেন। তবে বর্তমানে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরিষার চাহিদা বেড়েছে। তাই সরিষা আবাদে সব পর্যায়ের কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। চাষিদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বিগত বছরের তুলনায় আবাদও হয়েছে ভালো।