বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের স্রোতঃস্বিনী নাগর নদ এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। আর এ অবস্থায় নদ তীরবর্তী লোকজন নদের বুকে বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন। বিভিন্ন ফসলের সবুজ আভায় নদ বক্ষ সবুজের সমারোহে পরিণত হয়েছে। যে নাগর নদে এক সময় পালতোলা নৌকায় দেশের বিভিন্ন স্থান হতে নানা ধরনের মালামাল দুপচাঁচিয়া ও তালোড়া আনা নেওয়া করা হতো, শুষ্ক মৌসুমে সেই নদ আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি ও নদ তীরবর্তী লোকজনের কাছে জানা যায়, স্বাধীনতার পূর্ব হতে আশির দশক পর্যন্ত দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের তেমাথা ও উপজেলার তালোড়া বাজারের খাদ্য গুদাম সংলগ্ন স্থানে দেশের বিভিন্ন নৌ বন্দর হতে বড় বড় নৌকায় মালামাল আসতো। সে সময়ে নৌ পথে বেশির ভাগ মালামাল আনা নেওয়া করা হতো। স্রোতঃস্বিনী নাগর নদে জলজ প্রাণী শুশুকের ডিগবাজি ছিল দেখার মতো। কালের গর্ভে এ নদের নাব্য হারিয়ে শুষ্ক মৌসুমে মরা খালে পরিণত হয়েছে। শুষ্ক নাগর নদের বুকে নদ তীরবর্তী লোকজন আলু, সরিষা, গম, ধানের চারাসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন।
উপজেলা স্বর্গপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন ও সাবলা গ্রামের নরেন চন্দ্র দাস, হরিপদ দাস জানান, নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এ নাগর নদে সারা বছরই কমবেশি পানি থাকতো। পানি থাকার দরুন এলাকার অনেক লোক এ নদে মাছ শিকার করে সংসার চালাতেন। কিন্তু বর্তমানে সেই অবস্থা আর নেই। এখন বর্ষা মৌসুমেও আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না।
তালোড়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহন লাল গুপ্ত জানান, এক সময় ছিল যখন বড় বড় নৌকায় তালোড়ায় বিভিন্ন মালামাল আসতো। সে সময় নৌ পথে ব্যবসা ভালো হওয়ায় বন্দর নগর হিসেবে তালোড়ার খ্যাতি ছিল।
দুপচাঁচিয়া মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বলেন, স্বাধীনতার পূর্ব হতে আশির দশক পর্যন্ত নৌপথে দুপচাঁচিয়া ও তালোড়ায় বিভিন্ন পণ্য আনা নেওয়া করা হতো। স্রোতঃস্বিনী এ নাগর নদের নাব্যতাহীনতার কারণে বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে আর তেমন পানি থাকে না।