শান্তিগঞ্জে ডেঞ্জার ক্লোজারে বালি মাটি, শঙ্কায় হাজারো কৃষক
হুমকিতে ১২ হাজার হেক্টর বোরো জমি
প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ে চলতি বছরে ৬৬টি প্রকল্পে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের বৃহত্তর দেখার হাওড় অংশে ১৪টি প্রকল্পে কাজ চলমান আছে। তবে অভিযোগ উঠেছে এই হাওড়ে বালি মাটি দিয়ে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বালি মাটি দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করায় বাঁধটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা।
জানা গেছে, ৬৬টি প্রকল্পের অনুকূলে এ বছর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। দেখার হাওড় অংশের ৩টি ডেঞ্জার ক্লোজার রয়েছে। এর মধ্যে জয়কলস ইউরিয়নের উথারিয়া, দিগদাইড় ও পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের পুটিয়া নদীর ক্লোজার ডেঞ্জার পয়েন্ট নামে পরিচিত। পুটিয়া নদীর ক্লোজারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মো. রুপন মিয়া ও সদস্য সচিব শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দেখার হাওড়ের (ডাইক-১) ৮নং প্রকল্পের পুটিয়া নদীর ক্লোজারের এই প্রকল্পে ৪৭০ মিটার কাজের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়ে ২০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
সরেজমিন উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের দেখার হাওড়ের (ডাইক-১) ৮নং প্রকল্পের পুটিয়া নদীর ক্লোজারে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ অংশে ফেলা হয়েছে বালি মাটি, ঘাসের বদলে লাগিয়েছে মরা ছনের গোছা। বৃষ্টি এলেই বালি মাটির বাঁধটি ধসে পড়তে পারে। সেই সঙ্গে আগাম বন্যায় যে কোনো সময় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাঁধের কাজে কোন দুর্মুচ ব্যবহার করা হয়নি। মাটি কাটার কোদাল ব্যবহার করে বালি মাটির বাঁধটি উপস্থাপন করা হয়েছে। মাঝে মাঝে কিছু এটেল মাটি দেখা গেছে। তবে মূল ক্লোজারে ব্যাপকভাবে দেওয়া হয়েছে বালি মাটি।
হাওড়ের কৃষক আলা উদ্দিন, রমিজ মিয়া, ছালিক আহমেদ জানান- 'বাঁধটি সম্পূর্ণরূপে বালি মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই বাঁধে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। সরকারি টাকা যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। নিজেরা লাভবান হতে পিআইসি কমিটির লোকজন মনগড়াভাবে কাজ করছেন। আমরা এই হাওড়ের অনেক কষ্টের ফসল লাগিয়েছি। বৃষ্টি এলে বাঁধটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।'
৮নং প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য রোপণ মিয়া জানান, 'বাঁধটি সুন্দর করার জন্য কিছু বালি মাটি দিয়েছি, তবে পুরো বাঁধে এই মাটি ব্যবহার করিনি। ঘাস না পেয়ে আমরা ছনের গোছা লাগিয়েছি। বৃষ্টি পড়লে এই ছনগুলো গজিয়ে উঠবে। বাঁধ ভেঙে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা টেকসইভাবে কাজটি করেছি।'
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, কোথাও বালি মাটির বাঁধ মেনে নেওয়া হবে না। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বাঁধ থেকে শিগগিরই বালি মাটি অপসারণ করা হবে।