বগুড়ায় নারী শ্রমিকের কদর বাড়লেও, বাড়েনি মজুরি
প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ইমরান হোসেন ইমন, বগুড়া
বগুড়ার ফসলি মাঠে নারী শ্রমিকদের কদর বাড়লেও বাড়েনি তাদের মজুরি। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এখন মাঠে-প্রান্তরে কাজ করছে। কিন্তু নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য কাটেনি এখনও।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি গ্রামের ফসলি মাঠে সরিষা তোলার কাজ করতে দেখা যায় একঝাঁক নারী শ্রমিককে। সচরাচর ফসলি মাঠে পুরুষ শ্রমিককে বেশিরভাগ সময় কাজ করতে দেখা গেলেও এখন সেই মাঠে সমানতালে কাজ করে যাচ্ছে নারী শ্রমিকরাও। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা ফসলি মাঠে শ্রমিকের কাজ করছে। পুরুষদের থেকে কম মজুরি হওয়ায় এসব নারী শ্রমিকদের কদরও বেড়েছে।
ধুনট উপজেলার পূর্বভরনশাহী গ্রামের জমি থেকে সরিষা তুললে ব্যস্ত নারী শ্রমিক তাপসী রানী জানান, জনপ্রতি ৩০০ টাকা মজুরিতে ৭ জন নারী ২ বিঘা জমির সরিষা তোলার কাজ করছেন। খাওয়া-দাওয়া তারা বাড়ি থেকেই নিয়ে আসেন। অভাবের সংসারে স্বামীর পাশাপাশি ফসলি মাঠে কাজ করেন তিনি।
তাপসী রানীর বাড়ি কাজিপুর উপজেলার সোনামুখি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে। তার মতো শ্রীমতি, বাসমতি ও বাসন্তী রানীসহ ওই গ্রামের প্রায় ৯০ জন নারী পৃথকভাবে দল বেঁধে ফসলি মাঠের সরিষা, ভুট্টা, আলু, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল তোলার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
তবে ফসলি মাঠে নারীশ্রমিক দিয়ে কাজ করানো প্রসঙ্গে ধুনটের পূর্বভরণশাহী গ্রামের জমির মালিক রঞ্জু মিয়া জানান, পুরুষদের তুলনায় নারীরা অনেক বেশি শ্রম দেয়। তাদের পারিশ্রমিকও তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তিনি বলেন, জমি থেকে সরিষা তুলতে পুরুষ শ্রমিককে ৪০০ টাকা করে দিতে হতো। আবারও খাওয়া-দাওয়াও করাতে হতো। সেই তুলনায় নারী শ্রমিকরা ৩০০ টাকা করে মজুরি নেয়। আবার খাওয়া-দাওয়াও দিতে হয় না।
শেরপুর উপজেলার উলিপুর গ্রামের ফসলিজমিতে কাজে ব্যস্ত আরেক নারী শ্রমিক আমেনা বেগম বলেন, ৩০০ টাকা মজুরিতে সরিষা তোলার কাজ করছি। সরিষা, ভুট্টা, আলু, মরিচ মৌসুম শেষে হলে বাড়িতে বসে থাকতে হয়। তখন তেমন কোনো কাজ থাকে না।
ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল করিম পটু জানান, নারী শ্রমিকদের কারণে কম খরচে অনেক ফসলই সহজে ঘরে তোলা যায়। তাই গ্রামগঞ্জে এসব নারী শ্রমিকদের কদরও রয়েছে।