৩ হাজার ৫৩৬ হেক্টর জমিতে চাষ

'সুখসাগর' পেঁয়াজের আশায় মেহেরপুরের চাষিরা

প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুরের চাষিরা উচ্চ ফলনশীল জাতের সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ করে আসছে বিগত ১৮ বছর ধরে। এ বছরও জেলায় ব্যাপকহারে সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হলেও উত্তোলনের ভরা মৌসুমে এলসির মাধ্যমে দেশে পেঁয়াজ আমদানি করায় লোকসান গুনতে হয় তাদের। তবে এ বছর এখন পর্যন্ত এলসি বন্ধ ও দাম ভালো থাকায় সুখসাগর পেঁয়াজে সুখের আশায় মেহেরপুরের চাষিরা। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জেলায় পেঁয়াজের চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৬ হেক্টর জমিতে। যার অধিকাংশই সুখসাগর পেঁয়াজের মধ্যে ৮০ ভাগ এই জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয় মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে। প্রতি বিঘা জমির পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সুখসাগর পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ১৫০ থেকে ২০০ মণ পর্যন্ত। গেল বছর সুখসাগর পেঁয়াজ উত্তোলনের ভরা মৌসুমে বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৪শ টাকা মণ দরে। এ বছর এখন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬শ' টাকা মণ দরে। এলসির মাধ্যমে দেশে পেঁয়াজ আমদানি না করা হলে এই দাম অক্ষুণ্ন থাকবে। সুখসাগর পেঁয়াজ উত্তোলনের ভরা মৌসুমে এর দাম কমে যায়। তারপরেও ১ হাজার থেকে ১২শ' টাকা মণ দরে বিক্রি করতে পারলেও বিঘা প্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করা সম্ভব হবে। শুধুমাত্র এলসি বন্ধ থাকলে পেঁয়াজের বাজার পাবে বলে মনে করে চাষিরা। তাদের দাবি সরকার যেন এই পেয়াঁজটা যখন চাষিরা তুলতে শুরু করবে তখন যেন সরকার পেঁয়াজ আমদানি না করে। মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আশরাফুল জানায়, গত বছর তার ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ ছিল। সেই পেঁয়াজ ৫শ' টাকা মণ দরে বিক্রি করে দুই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এবার পেঁয়াজের দামটা ভালো দেখে ৮ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছে। তার আশা বর্তমান পেঁয়াজের যে বাজার সেটা থাকলে গতবারের লোকসানটা পুষিয়ে নিতে পারবে। একই গ্রামের পেঁয়াজ চাষী রকিবুল জানায়, সুখসাগর পেঁয়াজ চাষে লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজের সঙ্গে কলার চাষ করেছে। পেঁয়াজে লোকসান হলে যাতে কলা বিক্রি করে লোকসানের হাত থেকে বাঁচা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় পেঁয়াজের আগা পোড়া রোগ দেখা দিয়েছে। এর থেকে পেঁয়াজ রক্ষা করার জন্য বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ প্রয়োগ, রোবলাল ও ডাইজিনাম ৪৫ স্প্রে করতে এবং ইউরিয়া সার প্রয়োগ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চাষিরা এবার ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো বাজার দাম পাবে এবং লাভবান হবে এমনটাই মনে করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।