গোবিন্দগঞ্জে ৪০ যন্ত্রের আবিষ্কারক ক্ষুদে বিজ্ঞানী শাহীন

প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজ পড়ুয়া শাহিন নামের এক যুবক নিজের মেধা আর উদ্বোধনী ক্ষমতায় তৈরি করেছেন প্রতিদিনের কাজে ব্যবহার যোগ্য ৪০টিরও বেশি যন্ত্র। ইতোমধ্যে তিনি জ্বালানি তেল ও বিদু্যৎ ছাড়াই ফেলে দেওয়া কনটেইনার-বোতলের মাধ্যমে বায়ুশক্তিকে ব্যবহার করে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন যন্ত্র, ভূমিকম্প সতর্কতা অ্যালার্ম সিস্টেম, চুরি রোধে অনলাইন মেসেজিং সিস্টেমসহ আরও অনেক যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। তার সবচেয়ে আশ্চর্যমূলক আবিষ্কার হলো মোবাইল ফোনের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এক ধরনের বিশেষ চশমা। যা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনকে ব্যবহারকারীর চোখে ঠিকঠাক দেখালেও অন্যরা চোখে সাদা দেখতে পাবে। বর্তমানে বেতার-বিদু্যৎ সঞ্চালন বিষয়ে গবেষণা করছেন এ ক্ষুদে বিজ্ঞানী শাহীন। অল্প দূরত্বে সাফল্য পেলেও তা ৩ কি.মি. পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি। এ কারণে এলাকায় ক্ষুদে বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিতিও পেয়েছেন। এলাকায় ক্ষুদে বিজ্ঞানী নামে পরিচিত শাহীনের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খুকশিয়া গ্রামের মৃত শাহারুল ইসলামের ছেলে। পেশায় দর্জি ছিলেন শাহীনের বাবা। ২০২১ সালে নাকাইহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আর্থিক সমস্যার কারণে বিজ্ঞান নিয়ে পড়া হয়নি। বর্তমানে নাকাইহাট ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করছেন। কলেজে ভর্তির পরপরই ২০২৩ সালে ৪৪তম বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেন। মেলায় তার আবিষ্কারগুলো জেলা, উপজেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার এনে দেয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। মানবিক বিভাগে পড়েও অসাধারণ বিজ্ঞানমনস্ক শাহীন। তার আবিষ্কারে মুগ্ধ-বিস্মিত স্থানীয়রা। এ বিষয়ে খুদে বিজ্ঞানী শাহীন জানান, ছোটবেলা থেকেই বিশেষ কিছু দেখলেই তা নিয়ে গবেষণা-আবিষ্কারের অদ্ভুত এক আগ্রহ সৃষ্টি হয় মনে। যেখানেই কোনো সমস্যা দেখছেন সেটা সমাধানের চেষ্টা করেন। তার লক্ষ্য এসব যন্ত্র সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু শাহীনের এগিয়ে যাওয়ার পথে কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থসংকট। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের চলমান এ অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে দৃঢ় প্রত্যয়ী শাহীন।