সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ
প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
* কমবে সময় ও খরচ
* বাড়বে ফলন
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের যুগে সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে ট্রান্সপস্নান্টারের মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এরই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও পটুয়াখালীর গলাচিপায় এ পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে চারা রোপণ করলে একদিকে যেমন সময় ও খরচ বাঁচবে, তেমনি কৃষকরা পাবেন তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন। প্রতিনিদিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত-
চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি বলেন, দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের মাধ্যমে সমলয়ে বোরো ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। গত সোমবার উপজেলার ভোলানাথপুর গ্রামে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে অত্যাধুনিক মেশিন রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের সাহায্যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে স্বল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে ৫০ একর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাফর ইকবাল।
এ সময় তিনি বলেন, দেশে দিন দিন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব না। খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে চাষাবাদে যান্ত্রিকীককরণ প্রয়োজন। শ্রমিক দিয়ে কাজ করলে সময় ও খরচ দুটোই বেশি প্রয়োজন হয়। যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে সমলয়ে ধানের চারা লাগানোর ফলে দুটোই কম লাগবে। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হতে পারবেন। এ যন্ত্রের সাহায্য সমগভীরতায়, সম দূরত্বে এবং স্বল্প শ্রমে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন। এতে স্বল্প সময় লাগবে, খরচ কমবে এবং ফলন বৃদ্ধি পাবে।
কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে ইউএনও এ কে এম শরীফুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এমজিএম সারোয়ার হোসেন প্রমুখ।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরশন-বিএডিসি যৌথভাবে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বোরো ধানের চারা রোপণের এ কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে সময়, শ্রম, অর্থ ও পানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি জমিতে উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। টেকসই উন্নয়ন ও স্মার্ট কৃষিকে এগিয়ে নিতে কৃষিকে আরও উন্নত প্রযুক্তিতে কৃষি চাষাবাদ প্রয়োজন। আর সে কারণেই সরকার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের মাধ্যমে নানামূখী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের মাধ্যমে কম খরচে খুব দ্রম্নত ও স্বল্প সময়ে ধানের চারা রোপণ ও ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। আশা করি আধুনিক যন্ত্রপাতি কৃষকরা মানিয়ে নেবেন।
উপজেলার ৯০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে প্রাথমিকভাবে রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ যন্ত্রের সাহায্যে দিনে ৪ একর জমিতে ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব।
উদ্যোক্তরা জানান, রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিক জমিতে সুস্থ ও সবল চারা রোপণ করতে পারবেন কৃষকরা। এতে সময়, শ্রম, অর্থ ও পানি সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি জমিতে উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, 'কৃষিই সমৃদ্ধি' প্রতিপাদ্যের আলোকে পটুয়াখালীর গলাচিপায় কৃষি প্রণোদনা ২০২৩-২৪ কর্মসূচির আওতায় সমলয় চাষাবাদের বস্নক প্রদর্শনীর ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার কিসমত হরিদেবপুরে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম।
জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সার্বিক সহযোগিতায় আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে কৃষিক্ষেত্রে বিপস্নব ঘটিয়ে কৃষকরা যেমনি লাভবান হচ্ছেন, তেমনি দেশ দিন দিন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষক ভাইরা সরকারের এই প্রজেক্টকে সফল করবেন এই প্রত্যাশা করছি।'
ইউএনও মহিউদ্দিন আল হেলালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার খায়রুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসিম রেজা ও গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার।
উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও উপজেলা কৃষক প্রতিনিধি কাওসার আহম্মেদ তালুকদার, গোলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম মিয়া, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ আলম প্রমুখ।